• তারকেশ্বরে শ্রাবণী মেলায় পরপর দুর্ঘটনা, প্রাণ গেল একাধিক পুণ্যার্থীর, আত্মীয়দের কান্নায় থমথমে পরিবেশ ...
    আজকাল | ১২ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: তারকেশ্বরে শ্রাবণী মেলায় যাওয়ার পথে পরপর দুর্ঘটনায়। দু'টি পৃথক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দু'জনের। আহত হয়েছেন আরও একজন। প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে সিঙ্গুরে দেশাপাড়া এলাকায়। সেখানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। দ্বিতীয়টি ঘটেছে তারকেশ্বরে। বন্ধুদের সঙ্গে বাইকে করে জল ঢালতে যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় এক পুণ্যার্থীর।

    প্রথম ঘটনাটি ঘটে সিঙ্গুরের দেশাপাড়া এলাকায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাতে বারুইপুর এলাকার ১৭জনের একটি পুণ্যার্থীর দল শেওড়াফুলি থেকে জল তুলে পায়ে হেঁটে তারকেশ্বরের উদ্দেশে যাচ্ছিল। সিঙ্গুরের দেশাপাড়া এলাকায় তাঁরা বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বসে পড়েন। সেখানে রাস্তার পাশে একটি ইলেকট্রিক ট্রান্সফর্মার ছিল। 

    পূণ্যার্থী দলের একজনের হাতে একটি বড় রডের সঙ্গে ঝান্ডা লাগানো ছিল বলে তাঁদের দলের সদস্যরা জানিয়েছেন। অসাবধানতাবশত সেই ঝান্ডা ট্রান্সফরমারের সঙ্গে সংযোগ হতেই আগুনের ফুলকি বের হয়ে বিকট শব্দ হয়। ঘটনায় দু'জন পূণ্যার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জ্ঞান হারান। সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করে সিঙ্গুর থানার পুলিশ সিঙ্গুর ট্রমা কেয়ার সেন্টারে নিয়ে যায়। 

    সেখানে একজনকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকরা। আর একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীরামপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়। মৃত যুবকের নাম, সুমন নস্কর (১৭)। তাঁর বাড়ি বারুইপুর থানার বিন্ধ্যাখালি এলাকায়। চিকিৎসাধীন আহত যুবকের নাম দেব ঘরামি।মৃতের বন্ধু বিকাশ নস্কর জানান, 'আমরা বিশ্রাম নেব বলে রাস্তার পাশে বাঁক রেখেছিলাম। তারপাশেই  একটি ইলেকট্রিক ট্রান্সফরমার ছিল। তখন একজনের হাতে স্টিলের ঝান্ডা ছিল জয় শ্রী রাম লেখা। সেটা ঠেকে যায়। তারপরেই বিকট শব্দ হয়ে আগুনের ফুলকি বের হয়। যে ঘটনা আমাদের সঙ্গে ঘটল, আমরা সকলেই হকচকিয়ে গিয়েছি।' 

    দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে সোমবার সকালে তারকেশ্বর এলাকায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এদিন সকালে বাইক নিয়ে দশজন বন্ধুদের একটি দল  তারকেশ্বর মন্দিরে জল ঢালার উদ্দেশে শেওড়াফুলি নিমাই তীর্থ ঘাট থেকে জল তুলে বাইকে করে তারকেশ্বরের উদ্দেশে রওনা হয়। তারকেশ্বর মন্দিরে প্রবেশের কিছুটা আগে বাজিতপুর চৌমাথায় এসে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন এই দলের এক জল যাত্রী। 

    তড়িঘড়ি তাঁকে তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে তার বন্ধুবান্ধবরা জানায়। মৃতের নাম অমিত পাকড়ে। তাঁর বয়স ৩৬ বছর। যুবকের বাড়ি হাওড়া জেলার বালি এলাকায়। 

    মৃতের এক বন্ধু কমল পাকড়ে জানান, 'আমরা সবাই সুস্থই ছিলাম। মোটরবাইক থেকে নামতেই হঠাৎ অমিত বলে তার শরীর খারাপ করছে। বুকে যন্ত্রণা হচ্ছিল। সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই।  চিকিৎসা চলাকালীন সে মারা যায়।' দু'টি ঘটনার ক্ষেত্রেই পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করেছে। ঘটনা দু'টির তদন্ত শুরু করেছে তারা। ঘটনাগুলি ঘিরে পুণ্যার্থীদের মধ্যেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)