বছর ঘুরলেও স্তিমিত হয়নি আরজি কর-কাণ্ডের ক্ষোভের আঁচ। এরই মাঝে সংশ্লিষ্ট ধর্ষণ-খুন কাণ্ডের সব দোষী ধরা পড়েনি বলেই নিজের মত প্রকাশ করলেন বারাসতের তৃণমূল বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। উল্লেখ্য, বারাসতে একটি রক্তদান শিবিরে গিয়ে আরজি কর-কাণ্ডের তদন্ত নিয়ে মুখ খুললেন চিরঞ্জিত। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তাঁর ব্যক্তিগত ভাবে কি মনে হয়, সব দোষীরা কী ধরা পড়েছে? জবাবে সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিধায়ক বলেন, ‘না, আমার মনে হয় না। সবারই মনে হয় না। সিবিআই চোখ বন্ধ করে আছে। কেন্দ্রীয় সরকার কী করছে?’
আরজি কর-কাণ্ডে আরও অনেকে জড়িত বলে দীর্ঘ দিন ধরেই দাবি করে আসছে নির্যাতিতার পরিবার। সে প্রসঙ্গেও জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল চিরঞ্জিৎকে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, তাদের ধরতে হবে তো। ধরছে না তো! পয়েন্ট আউট করতে হবে। ওরা দেখাবে। সিবিআই যাবে।’ সিবিআই তদন্তে গাফিলতি রয়েছে বলে দাবি করে চিরঞ্জিৎ আরও বলেন, ‘সিবিআই তো দেখলাম, উপরে একটা কী ঘর আছে, ৯ নম্বর না কী ঘর! ওখানে নাকি রক্তের দাগ আছে! সেই ঘরের তো এখনও চাবিই খোলেনি। ঢোকেইনি। বহু মানুষ আছে, যাঁদের ক্রস এগজামিনই করেনি।’
শনিবার নবান্ন অভিযানে গিয়ে জখম হয়েছেন নির্যাতিতার মা। সেই ঘটনা নিয়ে চিরঞ্জিৎ বলেন, ‘কে করেছে তো বোঝা যাচ্ছে না। জানা যাক। তারপর বলা যাবে। তবে যারা নিয়ে গিয়েছিল, নিরাপত্তা দেওয়া উচিত ছিল তাদের। বিজেপি নিয়ে গিয়েছিল, ঘিরে রেখেছিল। সেটা ঠিক ভাবে হয়নি। তার মধ্যে কে কাকে মেরেছে বলতে পারব না! আমি দুঃখিত, মর্মাহত যে ওঁর লেগেছে। কিন্তু সমাধান হতেই হবে। এটুকু আমি বলতে পারি।’ উল্লেখ্য, তৃণমূল বরাবরই এই মর্মে প্রচার করে এসেছে, কলকাতা পুলিশ যে সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছিল, ধর্ষণ-খুনের মামলায় সিবিআইও তাঁর বিরুদ্ধেই চার্জশিট দিয়েছে। অবশেষে সঞ্জয়ই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে নিম্ন আদালতে।
অর্থাৎ, কলকাতা পুলিশ যে পথে এগিয়েছিল, সিবিআই-ও সে পথেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে বলে মনে করে তৃণমূল। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে চিরঞ্জিতের মত কিছুটা হলেও দলের মতের সঙ্গে মেলে না। তবে বিধায়ক চিরঞ্জিতের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূল মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘উনি একজন দায়িত্বশীল নাগরিক এবং বিশিষ্ট অভিনেতা। এই মনে হওয়ার পিছনে দুটো কারণ থাকতে পারে। এক, ওঁর কাছে তথ্য আছে। দুই, উনি কারও মুখ থেকে শুনে বলছেন। যাই হয়ে থাকুক, ওঁর উচিত সিবিআইয়ের অফিসে গিয়ে এটা বলে আসা। বিবৃতি দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনও মানে নেই।’