মলয় কুণ্ডু: দেশমাতৃকার স্বাধীনতার লক্ষ্যে ইংরেজ বিরোধিতা করে হাসিমুখ ফাঁসিকাঠকে বরণ করে নেওয়ার অসম সাহস যিনি দেখিয়েছিলেন, সেই বীর শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর আজ প্রয়াণ দিবস। আজকের দিন অর্থাৎ ১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট তাঁকে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হয়েছিল। এমন দিন বাংলা তথা বাঙালি তো বটেই, স্বাধীন ভারতের প্রত্যেক নাগরিকের কাছেই এক কালো দিন। বাংলার সেই বীর বিপ্লবীর আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে সোমবার সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষুদিরামকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এল কেন্দ্রীয় স্তরে বাঙালি মনীষীদের অবমাননার প্রসঙ্গ। সম্প্রতি ভিনরাজ্যে বাঙালি হেনস্তা নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগের মাঝে ক্ষুদিরামকে অসম্মান নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রতিক্রিয়া সময়োপযোগী, নিঃসন্দেহে।
সোমবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুদিরামের ফাঁসির কথা স্মরণ করতে গিয়ে অবিস্মরণীয় গানটির কথা লিখেছেন ?
“একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি
হাসি হাসি পরব ফাঁসি দেখবে ভারতবাসী”
বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর প্রয়াণ দিবসে জানাই সশ্রদ্ধ প্রণাম।”
এরপরই সেই পোস্টে বলিউড সিনেমা ‘কেশরী চ্যাপ্টার ২’-তে শহিদ বঙ্গসন্তান ক্ষুদিরাম বসুকে নিয়ে ভুল তথ্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। লিখেছেন, ”একটা কথা লিখি। সম্প্রতি একটি হিন্দি ছবিতে বিপ্লবী ক্ষুদিরামকে ‘সিং’ বলা হয়েছে। স্বাধীনতার জন্য যাঁরা জীবন দিয়েছেন তাঁদের অপমান করা হচ্ছে কেন? পথিকৃৎ অমর বিপ্লবী ক্ষুদিরামকে ধরেও টানাটানি করবে ভাষা-সন্ত্রাসীরা? আমাদের মেদিনীপুরের অদম্য কিশোরকে দেখানো হয়েছে পাঞ্জাবের ছেলে হিসেবে। অসহ্য! আমরা কিন্তু সবসময় দেশপ্রেম ও সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের প্রতীক এই মানুষটিকে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।”
মুখ্যমন্ত্রীর আরও বক্তব্য, ”ক্ষুদিরাম বসুর জন্মস্মৃতি বিজড়িত মহাবনী ও সংলগ্ন অঞ্চলের আরো বেশি উন্নয়নের জন্য মহাবনী ডেভেলপমেন্ট অথরিটি করেছি। এছাড়া মহাবনীতে শহীদ ক্ষুদিরামের মূর্তি স্থাপন থেকে শুরু করে পাঠাগার সংস্কার, নতুন একটি সুবিশাল অডিটোরিয়াম, কনফারেন্স রুম ? সবই করা হয়েছে। একটি মুক্তমঞ্চও করা হয়েছে। পাশাপাশি দর্শনার্থীদের জন্য নির্মিত হয়েছে আধুনিক কটেজ, ঐতিহ্যবাহী ক্ষুদিরাম পার্কের পুনরুজ্জীবন করা হয়েছে। পুরো এলাকাটাকে আলো দিয়ে সাজানোও হয়েছে। শুধু তাঁর জন্মস্থান মেদিনীপুরেই নয়, এই মহান বিপ্লবীকে শ্রদ্ধা জানাতে কলকাতায় একটি মেট্রো স্টেশনের নামও আমরা ওনার নামে রেখেছি। আমরা গর্বিত।”