১০ গোলে জেতা ম্যাচ ৬ গোলে জিতল ইস্টবেঙ্গল, ডুরান্ডে জয়ের হ্যাটট্রিক লাল-হলুদের
আনন্দবাজার | ১১ আগস্ট ২০২৫
প্রথমে নামধারী। এর পর ভারতীয় বায়ুসেনা। মরসুমের শুরুতে ইস্টবেঙ্গলের গোল নষ্টের রোগ সারানো যাচ্ছে না। কোচ অস্কার ব্রুজ়োকে চিন্তায় রাখবে এই প্রবণতা। রবিবার ডুরান্ডের শেষ ম্যাচে বায়ুসেনাকে ৬-১ গোলে হারাল ইস্টবেঙ্গল। তবে ম্যাচটা অন্তত নয়-দশ গোলে জেতা উচিত ছিল। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গোল করেছেন হামিদ আহদাদ, বিপিন সিংহ, আনোয়ার আলি, মহম্মদ রশিদ, সাউল ক্রেসপো এবং ডেভিড লালানসাঙ্গা।
গোটা ম্যাচ জুড়ে ইস্টবেঙ্গলের দাপট ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়নি। বায়ুসেনার বিরুদ্ধে তিন বিদেশিকে নিয়ে শুরু করেছিলেন অস্কার। প্রথম থেকেই ম্যাচ চলে যায় ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের নিয়ন্ত্রণে। শুরুতেই দুটো কর্নার পায় তারা। তবে দু’বারই বায়ুসেনার গোলকিপার শুভজিৎ বসু দলকে বাঁচান।
সাত মিনিটে প্রথম গোল করে ইস্টবেঙ্গল। ডান দিকে বল পান এডমুন্ড লালরিনডিকা। সামনে অনেকটা জায়গা ছিল। তিনি বক্সে ঢুকে মাঝে ক্রস করেন। একদম ঠিক জায়গায় ছিলেন হামিদ। হেডে বল জালে জড়ান তিনি। প্রথমার্ধেই হ্যাটট্রিক করে ফেলতে পারতেন মরক্কোর ফুটবলার। গোলের চার মিনিট পরে বিপিন পাস দিয়েছিলেন হামিদকে। তবে শুভজিৎ এগিয়ে এসে বল ধরে নেন।
দু’মিনিট পরে নাওরেম মহেশের পাস পেয়ে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন হামিদ। বিপক্ষ গোলকিপারকে এগিয়ে আসতে দেখে তিনি তাঁর মাথার উপর চিপ করে বল জালে জড়াতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই শটে তেমন জোর ছিল না। শেষ মুহূর্তে বল ক্লিয়ার করে দেন বায়ুসেনার ডিফেন্ডার। ১৫ মিনিটের মাথায় বিপিনের ক্রস থেকেই সরাসরি শটে গোল করতে গিয়েছিলেন। সামনে ফাঁকা গোল থাকলেও বলে পা-ই ছোঁয়াতে পারেননি হামিদ। দু’মিনিট পরে সুযোগ নষ্ট করেন বিপিন। বক্সে মিগুয়েল ফিগুয়েরার পাস পান। গোল ছিল তাঁর পিছনে। ব্যাকহিলে যেখানে গোল করা যেত, সেখানে অকারণে বিপক্ষের ফুটবলারকে কাটাতে গিয়ে বল হারান।
তার প্রায়শ্চিত্ত করেন ২৬ মিনিটে। দ্বিতীয় গোল করে ইস্টবেঙ্গল। একক দক্ষতায় গোল বিপিনের। একাই বক্সে বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন। বায়ুসেনার একাধিক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ঠান্ডা মাথায় গোল করেন। প্রথমার্ধে আরও সুযোকগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। উল্টে খেলার বিপরীতে একটা গোল শোধ করে দেয় বায়ুসেনা। বাঁ দিক থেকে ভেসে আসা ক্রসে দুই ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডারের ফাঁক দিয়ে হেড করে গোল করেন আমন খান। প্রথমার্ধের সংযুক্তি সময়ে আরও দুটো সুযোগ নষ্ট করেন মিগুয়েল এবং বিপিন।
দ্বিতীয়ার্ধেও ইস্টবেঙ্গল শুরু থেকে চাপ বজায় রেখেছিল। আবারও দুটো সুযোগ নষ্ট করেন হামিদ। প্রথম বার মহেশের বাড়ানো বল ধরতে পারেননি। তিন মিনিট পরে বিপিনের ক্রসে হেড করলেও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৬৪ মিনিটে তৃতীয় গোল করে ইস্টবেঙ্গল। মিগুয়েলের কর্নার থেকে আনোয়ারের জোরালো হেড শুভজিতের হাতে লেগে গোলে ঢুকে যায়। পাঁচ মিনিট পরে চতুর্থ গোল করেন রশিদ। কর্নার ক্লিয়ার করতে পারেননি বায়ুসেনার ডিফেন্ডারেরা। বক্সের বাইরে বল পেয়ে দূরপাল্লার শটে গোল করেন রশিদ।
শেষ ১০ মিনিটের জন্য পিভি বিষ্ণুকে নামিয়েছিলেন অস্কার। তিনিও সুযোগ নষ্টের তালিকায় নাম লেখান। বক্সের মধ্যে বায়ুসেনার ভুলে বল পেয়েছিলেন তিনি। ফাঁকা গোলেও বল ঠেলতে পারেননি। পোস্টের অনেক দূর দিয়ে বল বেরিয়ে যায়।
৮৫ মিনিটে পঞ্চম গোল ইস্টবেঙ্গল। ডান দিক থেকে এডমুন্ডের ভাসানো বল শুভজিৎ বাঁচালেও ফিরতি বলে গোল করেন সাউল। শেষ মুহূর্তে ডেভিডের গোল বায়ুসেনার ‘উপহার’।