প্রতিমা বিসর্জনের জেরে খালের দূষণ এড়াতে নিউ টাউনে নতুন ব্যবস্থা
আনন্দবাজার | ১১ আগস্ট ২০২৫
নিরঞ্জনের পরে দীর্ঘ সময় খালের জলেই পড়ে থাকত প্রতিমা। এর ফলে মরে যাচ্ছিল মাছ, নষ্ট হচ্ছিল জীববৈচিত্রও। জলের দূষণ এড়াতে তাই নিউ টাউনেরবিসর্জন ঘাটে বিশেষ ব্যবস্থা করছে নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ)। তারা জানাচ্ছে, এমন ব্যবস্থা করা হচ্ছে যাতে নিরঞ্জনের সঙ্গে সঙ্গে জল থেকে প্রতিমার কাঠামো তুলে ফেলা যায়। এতে খালের জলে রাসায়নিক দূষণ এড়ানো সম্ভব হবে।
নিউ টাউন তো বটেই, সল্টলেক থেকেও পুজোর প্রতিমা বিসর্জন ঘাটে নিরঞ্জন করতে নিয়ে যাওয়া হয়। দুই উপনগরীর অজস্র পুজোর প্রতিমা নিরঞ্জন হয় ওই ঘাটে।এনকেডিএ জানাচ্ছে, ঘাটের পাশের একটি অংশে দেওয়াল তোলা হচ্ছে। যাতে ওই অংশে জল থেকে প্রতিমা ওঠানো ও সেটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জেসিবি এবং ডাম্পার দাঁড় করানো যায়। একই সঙ্গে, ঘাটের পাশ থেকে একটি নতুন রাস্তাও তৈরি করা হচ্ছে। যাতে জলথেকে প্রতিমা ওঠানোর পরে দ্রুত সেই কাঠামো ওই রাস্তা দিয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, গঙ্গাদূষণ এড়াতে কলকাতা পুরসভা বহু দিন আগেই এমন ব্যবস্থা করেছে। বিসর্জনের সময়ে জলে প্রতিমা ফেলার সঙ্গে সঙ্গে সেটির কাঠামো উঠিয়ে ঘাটের এক প্রান্তে সরিয়ে দেওয়া হয়। এনকেডিএ জানাচ্ছে, খালের জলে মাছ রয়েছে। প্রতিমা জলে দীর্ঘ সময় পড়ে থাকায় খালের বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছিল। আধিকারিকেরা জানান, গত বছর নিরঞ্জন হওয়া প্রতিমার আবর্জনা জল থেকে তুলতে তিন দিন সময় লেগেছে। এর জেরে বেড়েছে জলের দূষণ। তার পরেই বিসর্জন ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জনকে কেন্দ্র করে খালের জলের দূষণ ঠেকানো নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল। আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, চলতি বছর থেকেই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হবে। নিরঞ্জনের পরেই প্রতিমার কাঠামো ও আবর্জনা সরিয়ে ফেলা হবে।
সম্প্রতি বিসর্জন ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, উপাসনা ঘরের ঠিক উল্টো দিকের অংশে বসানো হয়েছে দেওয়াল। কাজ শুরু হয়েছে রাস্তা তৈরিরও। সমগ্র জায়গাটি সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ওই ব্যবস্থায় বিসর্জনের পরে ঘাট পরিষ্কার করার মূল্যও কমবে বলে এনকেডিএ মনে করছে। আধিকারিকেরা জানান, দু’-তিন দিনের আবর্জনা সাফ করতে যত সংখ্যক জেসিবি কিংবা ডাম্পারের প্রয়োজন হয়, নতুন ব্যবস্থাপনায় সেই খরচও অনেক কমে আসবে।