• হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন নির্যাতিতার মা, কপালে ফোলা ভাব কমেছে, অবস্থা স্থিতিশীল, অ্যাম্বুল্যান্সে বাড়ির পথে রওনা
    আনন্দবাজার | ১১ আগস্ট ২০২৫
  • হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন নির্যাতিতার মা। রবিবার দুপুর ৩টে নাগাদ একটি অ্যাম্বুল্যান্সে বাড়ির পথে রওনা দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন নির্যাতিতার বাবা এবং পরিবারের অন্য সদস্যেরা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আপাতত তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল। কপালের চোট লাগা জায়গায় ফোলা ভাব কমেছে। অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তবে নির্যাতিতার মাকে পরে স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।

    পরে হাসপাতালের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, নির্যাতিতার মা রাতে ভাল ভাবে ঘুমিয়েছেন। মাথা ধরার মতো কোনও সমস্যা তাঁর নেই। সকালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানেই হাঁটেন তিনি। রবিবার সকালে স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের একটি দল নির্যাততের মাকে দেখে যায়। যদিও হাসপাতালের রিপোর্টে ‘পুলিশের মারের’ বিষয়টির উল্লেখ না-থাকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেন নির্যাতিতার বাবা।

    শনিবার আরজি কর কাণ্ডের এক বছরের মাথায় মেয়ের ধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে পথে নেমেছিলেন নিহত চিকিৎসকের মা-বাবা। নবান্ন অভিযানে বিজেপি নেতা এবং কর্মীদের সঙ্গে পুলিশ নির্যাতিতার মায়ের গায়েও হাত তোলে বলে অভিযোগ। মহিলা জানান, তাঁর কপাল এবং পিঠে আঘাত লেগেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, পুলিশ ওই মহিলাকে মারধর করেছে। ধাক্কাধাক্কি করেছে নির্যাতিতার বাবাকেও। শনিবার দুপুরেই নিহত চিকিৎসকের মাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাইপাসের ধারের একটি হাসপাতালে।

    রবিবার সকালে নির্যাতিতার বাবা অভিযোগ করেছিলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাজ্য সরকারের ‘চাপে’ রোগীকে ভর্তি নিতে চাননি। তবে এই প্রসঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। এই বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য জানা গেলে এই প্রতিবেদনে তা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছিলেন, রবিবার দুপুরেই হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যাবেন। তিনি বলেন, ‘‘ডাক্তারেরা মোটামুটি জানিয়ে দিয়েছেন, রোগী ‘আউট অফ ডেঞ্জার’ (বিপন্মুক্ত)। সেই জন্য আমরা বলেছি, হাসপাতালে থাকা তো অসুবিধার, আমরা আর হাসপাতালে থাকব না। দুপুরের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে বাড়ি নিয়ে যাব।’’ প্রৌঢ় আরও বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে ডাক্তারেরা তো সব সময়ই যোগাযোগ রাখছেন। চিকিৎসার কোনও অসুবিধা হবে না।’’

    পুলিশের বিরুদ্ধে আরজি করের নির্যাতিতার মাকে মারধরের অভিযোগ ঘিরে চাপানউতর তুঙ্গে। রবিবার সকালে নবান্ন অভিযানে জখম পুলিশকর্মীদের এসএসকেএমে দেখতে গিয়েছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি জানান, নির্যাতিতার মা জখম হয়েছেন বলে যে অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে, তার তদন্ত হবে। যদি মহিলার গায়ে হাত তোলা হয়ে থাকে, তবে সেই কাজ কারা করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁকে মারধর করা হয়েছে, এই অভিযোগ সত্যি না মিথ্যা, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ সে ক্ষেত্রে নির্যাতিতার মা যদি অভিযোগ করতে চান, পুলিশ কি হাসপাতালে যাবে তাঁর অভিযোগ নিতে? এই প্রশ্নের জবাবে কলকাতার নগরপাল বলেন, ‘‘অভিযোগ যদি আসে, অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ যদি না-ও পাই, আমরা (কলকাতা পুলিশ) স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত করব। ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)