শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই। বন্ধ হচ্ছে হুগলি জেলার একের পর শিশু শিক্ষাকেন্দ্র, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র এবং উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি। সম্প্রতি তালা পড়ল গোঘাট ১ ব্লকের সানবাঁধি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে। আবার আরামবাগের নারায়ণপুর উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে এক জনও পড়ুয়া নেই। এক জন শিক্ষক ও এক চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর বিকল্প ‘পোস্টিং’ না হওয়ায় তাঁরা এসে বিকেল পর্যন্ত কাটিয়ে বাড়ি ফিরছেন। বন্ধ শিক্ষাকেন্দ্রগুলি এখন গো-চারণভূমি, গ্রামবাসীর তিল-ধান ইত্যাদি ফসল রাখার জায়গা। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, ওই শিক্ষাকেন্দ্রগুলিই এখন রাতে সমাজবিরোধীদের আখড়া!
শিক্ষাকেন্দ্রগুলির এমন পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, “নতুন করে নিয়োগ হচ্ছে না। কেউ অবসর নিলে বিকল্প অতিথি-শিক্ষকও মিলছে না। বাধ্য হয়ে সেগুলো বন্ধ করা হচ্ছে এবং একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাকেন্দ্রের পড়ুয়াদের আশপাশের স্কুলের সঙ্গে একত্র করে দিচ্ছি আমরা।” ওই সব পরিত্যক্ত ভবনগুলি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বা অন্য কোনও সরকারি কাজে লাগানো যায় কি না, তা নিয়ে রাজ্য দফতরের দৃষ্টিও আকর্ষণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকাদের সংগঠন ‘শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চ’-এর হুগলি জেলা সম্পাদক তথা হরিপাল ব্লকের চুনিরডাঙা শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকা মুক্তি বারিকের অভিযোগ, “মূল সমস্যা, কেন্দ্র সূচনার পরে নতুন করে নিয়োগ না হওয়া। ২০ জন পড়ুয়াপিছু এক জন করে শিক্ষিকার ব্যবস্থা থাকলেও আমাদের ক্ষেত্রে কেউ অবসর নিলে সেই পদে আর নিয়োগ হচ্ছে না। এমনিতেই একার পক্ষে শিশু থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচটি ক্লাস একা সামলানো যাচ্ছে না।’’
জেলা বিভিন্ন শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকার ঘাটতির কথা স্বীকার করে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধ হলেও শিক্ষার অধিকার আইনে শিশুদের পঠনপাঠন বন্ধ হবে না। সেটা গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’’