সংবাদদাতা, বনগাঁ: বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ইছামতী নদী। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতগুলিকে। সংস্কার হয়নি। পলি জমে মজে গিয়েছে ইছামতী। নদী স্রোত হারানোয় কচুরিপানা গজিয়ে উঠেছে নদীর বুকে। নদীর মধ্যেই বিরাট কচুবন। ফলে নাব্যতা হারিয়ে বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে বনগাঁর মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতী। কমে গিয়েছে নদীর জলধারণ ক্ষমতা। মরশুমের টানা বৃষ্টিতে নদী কানায় কানায় পূর্ণ। জলস্তর বিপদসীমা পেরিয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে এক সেন্টিমিটারের বেশি জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যাপরিস্থিতি মোকাবিলায় সমস্তরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রিপল মজুত রয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
বনগাঁ ব্লকের ঘাটবাঁওড়, ধরমপুকুর পঞ্চায়েতের নদীপাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ত্রাণ শিবিরে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ধরমপুকুর পঞ্চায়েতের প্রধান তাপস মণ্ডল বলেন, ‘আমরা নদীপাড়ের বহু মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে এসেছি। সেখানে মানুষের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। ত্রাণশিবিরে থাকা বাসিন্দাদের খাবারের ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন গাইঘাটা ব্লকের রামনগর, সুটিয়া ও ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের একাংশ। এরই মধ্যে ইছামতী নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। জল বেড়েছে যমুনা নদীতেও। তার ফলে জলমগ্ন হয়েছে ইছাপুর-১ এবং জলেশ্বর পঞ্চায়েত। একাধিক বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। রাস্তাঘাট জলের তলায়। ডুবে গিয়েছে চাষের জমি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাইঘাটা ব্লকে ১৭টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে কয়েকশো বাসিন্দাকে সরানো হয়েছে। সেখানে রাখা হয়েছে প্রায় ৭০০ বাসিন্দাকে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বনগাঁ শহরে ২২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৪টি জলমগ্ন। পুরসভার পক্ষ থেকে ২৪টি পাম্পের সাহায্যে জল সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। নদীতীরবর্তী বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ বলেন, ‘বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা সবসময় পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি।’ নিজস্ব চিত্র