• বৃষ্টিতে জলমগ্ন বারাসতে ভেলায় চড়ে চলছে যাতায়াত, খাল সংস্কারের দাবি
    বর্তমান | ১১ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত ও সংবাদদাতা, বনগাঁ: বৃষ্টির জেরে বারাসত শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। সবথেকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি চার নম্বর ওয়ার্ডের। এখানকার বহু এলাকা এখনও জলের তলায়। মানুষকে যাতায়াত করতে হচ্ছে ভেলায় চেপে। পুরসভার সাফাইয়ের গাড়ি জঞ্জাল সংগ্রহ করছে না। জমছে আবর্জনার স্তূপ। পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর কারণ, জলে ভেসে গৃহস্থ বাড়িতে চলে আসছে বিষধর সাপ। শুকনো জায়গায় চলছে সাপে-মানুষে সহাবস্থান। এর পাশাপাশি গাইঘাটা ব্লকের রামনগর, ঝাউডাঙা, সুটিয়া পঞ্চায়েত এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। একাধিক রাস্তা জলের তলায়। বহু মানুষ বাড়ি ছাড়া। প্রশাসনের কাছে বাসিন্দাদের দাবি, ‘ত্রাণ চাই না। ইছামতী নদী ও খাল সংস্কারের ব্যবস্থা করুন।’

    বারাসত পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে এখনও জল জমে রয়েছে। বনমালীপুর, নন্দগড় সহ বেশ কিছু অঞ্চল জলের তলায়। চার নম্বর ওয়ার্ডের লোকনাথ সরণিতে কয়েকশো মানুষ জলবন্দি। পুরসভা পাম্প বসিয়ে জল বের করছে। কিন্তু আদৌ তা কোনও কাজে আসছে না। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই এলাকার বেশ কয়েকটি বড় আকারের জলাশয় উপচে জল লোকালয়ে ঢুকছে। সাফাইয়ের গাড়ি না আসায় আবর্জনা বাড়িতেই মজুত হচ্ছে। পার্থ ঘোষ নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘প্রায় ১৫ দিন হল পুরসভার জঞ্জালের গাড়ি আসছে না। বাধ্য হয়ে জলের উপর আবর্জনা ফেলতে হচ্ছে।’ অন্যান্য বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘এলাকার নিকাশি সমস্যার কারণেই এই দশা।’ মলিনা সরকার নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘আমাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে ভেলায় চেপে। সেটাই এখন একমাত্র ভরসা।’ কাউন্সিলার শিল্পী দাস বলেন, ‘নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। পাম্প বসিয়ে জল সরানো হচ্ছে। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য পাম্পিং স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।’ পুরসভার সিআইসি (সাফাই) সৌমেন আচার্য বলেন, ‘যে এলাকায় জল রয়েছে সেখানে গাড়ি যাচ্ছে না। শহরের যে সমস্ত এলাকায় আবর্জনা পড়ে আছে তা দ্রুত সরানো হবে।’

    অন্যদিকে গাইঘাটায় বৃহস্পতিবার এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী। সেদিন বাসিন্দারা জেলাশাসকের কাছে নদী সংস্কারের দাবি জানিয়েছিলেন। রবিবার গাইঘাটা ব্লকের জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শনে যান উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের কো-মেন্টর বিশ্বজিৎ দাস। সুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচপোতা পাবনাপাড়াতে জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। বাসিন্দারা এদিন তাঁর কাছেও নদী ও খাল সংস্কারের দাবি জানান। স্থানীয় বাসিন্দা পীযূষ বিশ্বাস বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাস করছি। বৃষ্টি হলেই এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। আমরা জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চাই।’
  • Link to this news (বর্তমান)