নোটিসের পরও ‘বিপজ্জনক’ বাড়ি মেরামত না হলে মালিকের বিরুদ্ধে হবে এফআইআর
বর্তমান | ১১ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বিপজ্জনক বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে পুলিসে অভিযোগ জানানো হবে। সম্প্রতি এ কথা জানান কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তবে এ সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা এখনও পর্যন্ত জারি হয়নি। খুব শীঘ্রই সেই পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ।
সাম্প্রতিককালে শহরজুড়ে একের পর এক পুরনো বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। বিপজ্জনক বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। নারকেলডাঙা থেকে শুরু করে গিরিশ পার্ক কিংবা জানবাজার, সর্বত্র এক ছবি। যার পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র বলেন, পুরনো বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দাদের অনেকবার বোঝানো হয়েছে। বাড়ির মালিক থেকে শুরু করে ভাড়াটিয়া সকলের স্বার্থ যাতে সুরক্ষিত থাকে, তার জন্য আইন সংশোধনও করেছে পুরসভা। তারপরও অবস্থার বিশেষ উন্নতি হচ্ছে না। এবার কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। বিপজ্জনক বাড়ির মালিক নোটিস পাওয়ার পর দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে বাড়ি মেরামত না করলে বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে সংশ্লিষ্ট থানায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে। কারণ এই ধরনের বাড়ি ভেঙে কারও মৃত্যু ঘটলে তা আরও দুর্ভাগ্যজনক।
যদিও এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি পুর কর্তৃপক্ষ। এই পদক্ষেপ কিভাবে করা যাবে, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। আইনি দিকগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, এটা হওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারণ প্রচার করে বুঝিয়ে কোনও লাভ হয়নি। সেক্ষেত্রে আইনি কড়াকড়ি করলে হয়ত ভয়ে এই ধরনের বাড়ির মালিক বা ভাড়াটিয়ারা বাড়ি খালি করবেন এবং আইনি সমস্যায় না জড়িয়ে তাড়াতাড়ি মেরামত করার উদ্যোগ নেবেন। তাতে সব পক্ষ লাভবান হবে। কিন্তু পুরসভার আইনে কী আছে, তা ভালো করে খতিয়ে দেখে তারপর এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করা হবে। যাতে ভবিষ্যতে এই নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে কেউ আদালতে না যেতে পারেন কিংবা গেলেও পুরসভা সংশ্লিষ্ট মামলায় যাতে জয় পায়।
উল্লেখ্য কয়েক বছর আগে পুরনো বা বিপজ্জনক বাড়ি নতুন করে তৈরি করার ক্ষেত্রে বিল্ডিং আইনে সংশোধন করেছিল পুরসভা। সেখানে ভাড়াটিয়াদের স্বার্থ সুরক্ষিত করা হয়েছিল। কারণ অনেক সময় মালিক চাইলেও বাড়ি মেরামত করতে পারেন না কারণ ভাড়াটিয়ারা বেঁকে বসেন। তাঁদের উচ্ছেদ করা হবে এই ভয়ে তাঁরা পাল্টা আদালতে চলে যান। যার পরিপ্রেক্ষিতে পুরসভা বিশেষ আইন নিয়ে আসে। বিল্ডিং বিভাগ পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি তৈরি করার ক্ষেত্রে যখন বিল্ডিং প্ল্যানে অনুমোদন দেবে তখনই ভাড়াটিয়াদের থেকে এনওসি নেওয়া হবে। তাঁরা কোথায় কতটা জায়গা নিয়ে ছিলেন সেই অনুপাতে নতুন বিল্ডিংয়ে তাঁদের অংশ সুরক্ষিত থাকবে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ভাড়াটিয়ারাও একটি সার্টিফিকেট পাবেন। ফলে মালিক বা প্রমোটার কাউকে ঠকাতে পারবেন না। কিন্তু এত কিছুর পরও শহরের বুকে বিপজ্জনক বাড়ি নতুন করে তৈরি হওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ গতি চোখে পড়েনি। প্রতিবছর বিশেষ করে বর্ষাকালে একের পর এক বাড়ি ভাঙার ঘটনা ঘটছে। বাড়ির বাসিন্দা থেকে শুরু করে এলাকাবাসীরাও কখনও কখনও আহত হচ্ছেন। সেই কারণেই এবার কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা