• গলসির মানাচর যেন শ্যুটিং স্পট, পর্যটনকেন্দ্র গড়ার ভাবনা প্রশাসনের
    বর্তমান | ১১ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ‘বালিকা বধূ’ সিনেমার সেই দৃশ্যটা মনে আছে?  বালুকাবেলায় বসে নায়ক-নায়িকা নির্জনে সময় কাটাচ্ছিলেন। পিছনে শান্ত নদী এঁকেবেঁকে বয়ে গিয়েছে। সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় লাল আভা ছড়িয়ে দিয়েছে। মাথা নাড়াচ্ছে বড় ঘাসের বন। নিজের খেয়ালে নায়ক-নায়িকা গেয়ে চলছেন, ‘এ ধরতি, এ নদীয়া…বড়ে আচ্ছে ল্যাগতে হে’। সিনেমার সেই শ্যুটিং স্পট যেন গলসির গোহগ্রামে মানাচরে উঠে এসেছে। কয়েক দিন আগে সেখানে প্রশাসনিক কাজে গিয়ে মুগ্ধ হয়েছেন এসডিও(সদর) তীর্থঙ্কর বিশ্বাস। তিনি বলেন, জায়গাটি সত্যিই মুগ্ধকর। নৌকায় চড়ে যাওয়ার সময় অন্য অনুভূতি হচ্ছিল। চারদিক জলে ঘেরা। সঙ্গে বালুকা রাশি। এমন পরিবেশে যে কারও মন ভালো হয়ে যায়। সেখানে পর্যটনকেন্দ্র তৈরি করার বিষয়টি ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।

    শিকারপুর থেকে আসা যায় মানা চরে। প্রায় ১০০টি পরিবারের বসবাস এখানে। মূলত সব্জি চাষ করেই এলাকার বাসিন্দাদের সংসার চলে। সারা বছরই বিভিন্ন ধরনের সব্জি এখানে চাষ হয়। এছাড়া নদীতে মাছও উঠে আসে। চারদিক জলে ঘেরা এই এলাকা এখন ইউটিউবারদের ‘ডেস্টিনেশন’ হয়ে উঠেছে। রিলস বা শর্ট ফিল্ম প্রতিদিনই এখানে শ্যুট হয়ে চলছে। পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে এখানে বাইরের এলাকার বাসিন্দারাও ঘুরে আসতে পারবেন। বর্ধমান শহর থেকে মানাচরে পৌঁছতে বেশি সময় লাগে না। 

    প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন এলাকার পর্যটনকেন্দ্রগুলির উন্নতিকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আউশগ্রামের বিভিন্ন এলাকা তারমধ্যে রয়েছে। এছাড়া স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্মস্থানগুলিতেও উন্নয়নমূলক কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবার সেই তালিকায় সংযোজন হতে চলেছে গলসির এই দ্বীপ। এলাকার বাসিন্দারা বলেন, কেউ একবার এই জায়গা ঘুরে গেলে বারবার এখানে আসার ইচ্ছে করবে। কলকাতা থেকেও এখানে এসে এক দিনেই ফেরা যাবে। এখান থেকে ফিরে আউশগ্রাম জঙ্গলমহলেও যাওয়া যেতে পারে। 

    পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, গলসিতে এত ভালো জায়গা আছে জানতাম না। ওই এলাকায় কীভাবে উন্নয়ন করা যায় সেটা দেখা হচ্ছে। পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠলে এলাকার বাসিন্দারাও আর্থিকভাবে সমৃদ্ধশালী হবে। গলসির বাসিন্দারা বলছেন, প্রকৃতির বহু আগেই এখানে রূপ উজাড় করে দিয়েছে। শান্ত পরিবেশ, এলাকার বাসিন্দা সরল জীবন এবং ভৌগোলিক অবস্থান পর্যটকদের মন জয় করবেই। দিনের বিভিন্ন সময় এখানকার রূপ বদলে যায়। সকালে সূর্যদয় এবং বিকেলে অস্ত যাওয়ার দৃশ্য পর্যটকদের কাছে বাড়তি পাওনা হয়ে উঠবে। এছাড়া মন ভালো করার জন্য রয়েছে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা নদী।
  • Link to this news (বর্তমান)