বাঁকুড়ায় ভূমি দপ্তরের আওতায় থাকা জলাশয়গুলি নিলামে তোলার উদ্যোগ
বর্তমান | ১১ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বাঁকুড়া ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আওতায় থাকা পুকুরগুলিকে নিলামে তোলার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ভূমি দপ্তরের তরফে এব্যাপারে মৎস্য দপ্তরের উপর ভার দেওয়া হয়েছে। মাছ চাষের জন্য জলাশয়গুলিকে অনলাইনে নিলামে তোলা হবে। মৎস্য দপ্তরের বাঁকুড়া জেলা আধিকারিক কিরণলাল দাস বলেন, ভূমি দপ্তরের পক্ষ থেকে জলাশয় নিলামের জন্য আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা জলাশয়গুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছি। বাকি প্রক্রিয়া সরকারি নিয়ম মেনে যত শীঘ্র সম্ভব হবে।
জেলা প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ায় ভূমি দপ্তরের মোট ৩৯টি জলাশয় রয়েছে। তার মধ্যে বর্তমানে ১৯টি পুকুর মাছ চাষের উপযোগী। বাকি জলাশয়গুলি মজে গিয়েছে। সেগুলি সংস্কারের আগে নিলামে তোলা মুশকিল। ওইসব জলাশয়কে মৎস্য দপ্তরের তরফে ‘আনফিট’ ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি তাঁরা ভূমি দপ্তরকে জানিয়েও দিয়েছে। জলাশয়গুলিকে কীভাবে মাছ চাষের উপযোগী করে তোলা যায়, সেব্যাপারেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মজে যাওয়া জলাশয়গুলিকে কীভাবে আগের অবস্থায় ফেরানো যায়, তা নিয়ে ভূমি দপ্তর আলোচনা করছে।
প্রসঙ্গত, বাঁকুড়ায় ভূমি দপ্তরের পুকুরগুলির ‘ই-অকশন’ বা অনলাইন নিলাম প্রক্রিয়া দেখভালের জন্য জেলাশাসকের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যদের কমিটি রয়েছে। সেই কমিটিতে মহকুমা শাসক সহ অন্য আধিকারিকরাও রয়েছেন। তাঁরাই সামগ্রিক বিষয়ের উপর নজরদারি চালাচ্ছেন। জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তা বলেন, জলাশয়গুলি নিলামে তোলা হলে ওই খাত থেকে সরকারের কোষাগারে অর্থ জমা পড়বে। বিষয়টি দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার জন্য মৎস্য দপ্তরকে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাঁকুড়ায় গ্রাম পঞ্চায়েতের দখলেও বেশকিছু জলাশয় রয়েছে। সেগুলিও লিজ দেওয়া হয়। তা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জনপ্রতিনিধিদের একাংশ পুকুর লিজ দেওয়ার সময় স্বজনপোষণ ও দুর্নীতি করেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে জেলাবাসীও ক্ষুব্ধ। স্বচ্ছতার সঙ্গে নিলাম প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য আবেদন করলেও দুর্নীতিপরায়ণ জনপ্রতিনিধিরা তা আমল দেন না বলে অভিযোগকারীদের দাবি। ভূমি দপ্তরের জলাশয় নিলাম প্রক্রিয়া নিয়ে অবশ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা সতর্ক রয়েছেন। এই ব্যাপারে যাতে কোনও অনিয়ম না হয়, তা দেখা হচ্ছে বলে তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন। মৎস্য দপ্তরও পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখছে।