ঝালদার স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে কোন্দল, বন্ধ ছিল মিড ডে মিল, স্কুল থেকে সরতে হল শিক্ষিকাকে
বর্তমান | ১১ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে গণ্ডগোলের জেরে লাটে উঠেছিল স্কুলের পড়াশোনা। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মিড ডে মিল রান্না। স্কুলে কমে গিয়েছিল পড়ুয়াদের আনাগোনাও। ঝালদা-১ ব্লকের ইচাগ পঞ্চায়েতের সারজুমাতু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই ঘটনার কথা পৌঁছেছিল স্কুল শিক্ষা দপ্তরেও। তবে, গত ৬ আগস্ট অভিভাবকরা স্কুলের গেটে তালা দিতেই টনক নড়ে প্রশাসনের। গত শুক্রবার একটি নির্দেশিকা জারি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। নির্দেশিকায় সুলেখা মণ্ডল নামের ওই শিক্ষিকাকে সারজুমাতু স্কুল থেকে ঝালদা-৩ চক্রের উপরজারগো প্রাথমিক স্কুলে বদলি করার কথা বলা হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রাজীব লোচন সরেন মানছেন, সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে ওই শিক্ষিকাকে সারজুমাতু থেকে অন্য স্কুলে বদলি করা হয়েছে। স্কুল শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, সারজুমাতু স্কুলের ওই শিক্ষিকার সঙ্গে কোন্দলে জড়িয়েছিলেন স্কুলের টিচার ইন চার্জ অরবিন্দ গরাঁই। যদিও অরবিন্দবাবু বলেন, ওই শিক্ষিকা নিয়মিত স্কুলে আসতেন না। সই করে চলে যেতেন। স্কুলে থাকলেও অধিকাংশ সময় ফোনে ব্যস্ত থাকতেন। ভালো করে পড়াতেন না। আমি বিষয়টি সংসদে জানিয়েছিলাম। ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে স্কুল শিক্ষা দপ্তরে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরাও। অভিযুক্ত শিক্ষিকা বলেন, দীর্ঘ ১১ বছর ধরে আমি ওই স্কুলে শিক্ষকতা করেছি। গত বছর ডিসেম্বরে ওই শিক্ষক আসার আগে নিজের কাঁধেই স্কুলের সমস্ত দায়িত্ব সামলেছি। কোনও দিন গ্রামের বাসিন্দারা আমার বিরুদ্ধে একটা অভিযোগও কোথাও জানাননি। আসলে ওই শিক্ষক স্কুলে যোগ দেওয়ার পর থেকেই একাধিক অনৈতিক কাজ করতে থাকেন। মিড ডে মিলে কারচুপি করতেন। আমি সেসব দুর্নীতি ধরে ফেলেছিলাম বলেই আমার বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের উসকে এইসব কাণ্ড ঘটিয়েছেন। আমার উপর নিয়ামিত মানসিক অত্যাচার করেছেন। যদিও এইসব অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন ওই শিক্ষক।
তবে, দুই শিক্ষকের এই টানাপোড়েনের জেরে লাটে ওঠে স্কুলের পঠনপাঠন। বন্ধ হয়ে যায় মিড ডে মিল রান্না। গত ৬ আগস্ট গ্রামবাসীরা স্কুলে তালা মেরে দিলে দুই শিক্ষককে নিয়ে বৈঠকে বসে ব্লক প্রশাসন। বৈঠকে ছিলেন ওই চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শুভঙ্কর নন্দাও। এনিয়ে একটি রিপোর্ট জমা পড়ে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছেও। এদিকে, ওই শিক্ষিকাও অসুস্থতা জনিত কারণে নিজে থেকেই বদলির আবেদন করেন। তারপরেই তাঁকে বদলি করা হয়। ওই শিক্ষিকা বলেন, ওই স্কুলে থেকে মানসিক যন্ত্রণা নিতে পারছিলাম না। আমাকে বদলি করার জন্য সংসদের চেয়াম্যানের কাছে অমি কৃতজ্ঞ। শিক্ষিকাকে অন্যত্র বদলি করায় সংসদের চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই শিক্ষকও। প্রতীকী চিত্র