নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: বাংলার ডেয়ারিতে দুধের জোগান বাড়াতে তৎপর হয়েছে জেলা প্রশাসন। যার জন্য চলতি অর্থবর্ষে ৭০টি সমবায় সমিতি গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মূলত গোপালকদের নিয়েই এই সমিতি তৈরি হবে। তৈরি হওয়া নতুন সমবায় সমিতিগুলোকে উৎসাহ দিতে আর্থিক সাহায্য দেবে প্রশাসন। প্রথম এক বছরে প্রতিমাসে সমিতির সেক্রেটারিদের ৩ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এর ফলে দুধের জোগান অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। দুধের ব্যবসা শুরুর প্রথম বছরেই যাতে সমিতিগুলি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন না হয় তার জন্যই এই অর্থ সাহায্যের সিদ্ধান্ত। সেই সঙ্গে গো পালকদের পেমেন্ট প্রক্রিয়াতেও গতি আনা হয়েছে। কোনও গোপালক তিনদিন লাগাতার দুধ দিলে, চতুর্থ কিংবা পঞ্চম দিনের মাথায় তাকে পেমেন্ট করা হচ্ছে।
কিষান মিল্ক ইউনিয়নের এমডি খোকন গাইন বলেন, আমরা দুগ্ধ সমবায় সমিতি সংখ্যা বৃদ্ধিতে জোর দিচ্ছে। যাতে দুধের জোগান বাড়ে। সেই সঙ্গে সমিতির সেক্রেটারিদের প্রথম বছরের প্রতি মাসে আর্থিক সাহায্য করা হবে। যাতে তাঁরা কোনওভাবে ব্যবসায়ে ক্ষতির সম্মুখীন হলে, তা কাটিয়ে উঠতে পারেন। আমরা পেমেন্ট প্রক্রিয়াকেও গতিশীল করেছি।
বাংলার ডেয়ারিতে দুধ সরবরাহ করে কিষান মিল্ক ইউনিয়ন। ইউনিয়নের আওতায় একসময় ৩২৯টি দুগ্ধ সমবায় সমিতি ছিল। কিন্তু তার মধ্যে নদীয়ার ২৪টি দুগ্ধ সমবায় সমিতি দুধ সরবরাহ করে। এমনিতেই ইউনিয়ন বিগত কয়েক বছর ধরে নানা সমস্যায় ধুঁকছিল। কর্মচারীদের বিপুল টাকা বকেয়া ছিল। যার ফলে কার্যত ইউনিয়ন বন্ধ হতে বসেছিল। বাংলার ডেয়ারিতে দুধের সরবরাহ তলানিতে এসে ঠেকে। ২০২১ সালে নদীয়া জেলার কিষাণ মিল্ক ইউনিয়ন ২০০০ লিটার দুধ সরবরাহ করতে পেরেছিল। বর্তমানে সেই দুধ সরবরাহের পরিমাণ ১৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার লিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। দুগ্ধ সমবায় সমিতির সংখ্যা বাড়লে সরবরাহের পরিমাণ অনেকটাই বাড়বে বলে দাবি করছে কিষান মিল্ক ইউনিয়ন।
নদীয়া জেলা পরিষদের প্রাণী পালন ও মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ প্রণয় চৌধুরী বলেন, নদীয়া জেলার বহু মানুষ গোপালন ও দুধের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তারা বিভিন্ন জায়গায় দুধ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। আমরা চাইছি তাদের এক ছাতার তলায় পুনরায় এনে, বাংলার ডেয়ারিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। সমিতি গঠনের মাধ্যমে গোপালকদের জীবন জীবিকার নতুন দিশা দেখানোই আমাদের উদ্দেশ্য। রাজ্য সরকার সেইমতো কাজ করছে। কিষান মিল্ক ইউনিয়নের এক আধিকারিক বলেন, দুধের গুণগতমান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। গোপালকদের বলা হচ্ছে সেই মাত্রা বজায় রেখেই তারা যেন দুধ দেয়। কালীগঞ্জ, তেহট্ট, নাকাশিপাড়া, করিমপুর সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় একাধিক চিলিং প্লান্ট রয়েছে। সেখানে সময়মতো দুধ পোঁছে দিতে হবে গোপালকদের।