• ২২ হাজার হেক্টর কৃষিজমি জলমগ্ন
    বর্তমান | ১১ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদের ন’টি ব্লক জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ২২ হাজার হেক্টর চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, ৩০০০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কান্দি মহকুমায় ক্ষতির পরিমাণ সবথেকে বেশি। ভরতপুর-১ ও ২, কান্দি, খড়গ্রাম, বড়ঞা সহ মোট পাঁচটি ব্লকে চাষের জমিতে জল ঢুকেছে। এছাড়াও বহরমপুর, নবগ্রাম, সূতি-১ ও ফরাক্কা ব্লকের সিংহভাগ ধানের জমি জলমগ্ন। অধিকাংশ জায়গায় চাষের জমিতে জল ঢুকেছে। কোথাও ভারী বৃষ্টির জলে খেত জলমগ্ন রয়েছে। কৃষিদপ্তর ইতিমধ্যেই প্রতিটি ব্লকের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা শুরু করেছে। তবে জলমগ্ন ব্লকগুলির মধ্যে পাঁচটি ব্লকে ক্ষতির সম্ভাবনা সব থেকে বেশি বলেই মনে করছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা।

    মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) চিরন্তন প্রামাণিক বলেন, পাঁচটি ব্লকে জল ঢুকে সর্বাধিক ধান চাষের জমিতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মোট সাতটি ব্লকের চাষের জমিতে জল ঢুকেছে। ২০ হাজার হেক্টরের বেশি চাষের জমি জলমগ্ন। ৩০০০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। নতুন করে ভারী বৃষ্টি না হওয়ার জেরে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

    লাগাতার বৃষ্টি এবং মুর্শিদাবাদের নদনদীর জলে প্লাবিত হয়েছে বর্ষার ধানচাষের বিস্তীর্ণ জমি। জলমগ্ন ব্লকগুলিতেই সব থেকে বেশি ধান চাষ হয়। জল দ্রুত না নামলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চাষিরা। জলমগ্ন কান্দি ব্লকের হিজলের ধানচাষিরা বলেন, গোটা ধানের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। জল কবে নামবে, বুঝতে পারছি না। দ্রুত জল না নামলে পুরো ধান নষ্ট হয়ে যাবে। অধিকাংশ জায়গায় চাষের জমিতে জল ঢুকেছে। ছোট চারাগাছ সম্পূর্ণ ডুবে গিয়েছে। দু’-একদিনের মধ্যে জল না নামলে আর ধান বাঁচানো যাবে না।

    এদিকে কৃষিদপ্তরের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ নির্ধারণ করা হচ্ছে। জল কবে নামবে, তার উপর জমির ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে। বহরমপুর ব্লকে বাঁধ ভেঙে নদীর নোনা জল ঢুকে অনেক জায়গায় প্লাবিত হওয়ায় সেখানে চাষের ক্ষতি বেশি হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এছাড়া কান্দি ব্লকের সব জায়গায় নদী ও বৃষ্টির জলে ধানের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। কোথাও সব্জির জমিও জলের তলায়। ফসল বাঁচানো তো দূর, ক্ষতিপূরণের দিকে তাকিয়ে আছেন চাষিরা। ইতিমধ্যেই বাংলা শস্যবিমার জন্য আবেদন করছেন তাঁরা। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার বিমার আবেদন বেশি হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

    কৃষিদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ব্লকগুলিতে অতি বৃষ্টি এবং বন্যার জলে হওয়া ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার কাজ শুরু হয়েছে। ঠিক কতটা জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা এখনই বলা যাবে না। অনেক জমি এখনও জলের তলায় রয়েছে। যে সমস্ত জমিতে ধানগাছ একটু বড় হয়ে গিয়েছে, সেখানে জল নেমে গেলে ফসলের খুব একটা ক্ষতি হবে না। তবে সমস্ত চাষিরা যেন বাংলা শস্যবিমার আবেদন করেন, সেই অনুরোধ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের নাম বিমায় নথিভুক্ত থাকলে তাঁরা পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ পাবে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)