সাগরপাড়ায় কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে টেন্ডারে দুর্নীতির অভিযোগ
বর্তমান | ১১ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, ডোমকল: দিন কয়েক আগেই কংগ্রেস পরিচালিত সাগরপাড়া সাহেবনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন পঞ্চায়েতে বিরোধী দলের নেতা। তার এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই ফের ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে টেন্ডারে দুর্নীতি সহ অনিয়মের অভিযোগ উঠল। এবারে শুধু বিরোধী দলনেতা কিংবা তৃণমূল সদস্যরাই নন, অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস ও বিজেপির কয়েকজন সদস্যও। প্রায় একই অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস সদস্য তথা পঞ্চায়েতের দুই সঞ্চালকও। এনিয়ে তাঁরা প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। জলঙ্গির বিডিও সুব্রত মল্লিক বলেন, অভিযোগ এসেছে আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।
যদিও দুর্নীতির সঙ্গে আপোষ না করায় মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে বলে দাবি ওই প্রধানের। সদস্যদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত দু'টি অনলাইন টেন্ডারের ক্ষেত্রে একই এজেন্সিকে এক জায়গায় গ্রহণযোগ্য ও অপর জায়গায় নির্ধারিত সর্বোচ্চ মূল্যের তুলনায় কম দর দেওয়া সত্ত্বেও অগ্রহণযোগ্য ঘোষণা করেছেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, কাজের ক্ষেত্রে প্রধান ইচ্ছেমতো প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন করেছেন। কিছু কাজের ক্ষেত্রে তা করা হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে তা করাই হয়নি। আরও অভিযোগ, কিছু ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত মূল্যায়নে ভুল আসার পরেও কাজের ওয়ার্ক অর্ডার দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান। সদস্যদের অভিযোগ, প্রধান পুরোপুরি অসৎ উদ্যেশ্যে মর্জিমাফিক পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, টেন্ডার নিয়ে লাগাতার দুর্নীতি করছেন বলেও অভিযোগ তাঁদের। এরপরই বেশকিছু সদস্য একজোট হয়ে শুক্রবার প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে প্রধানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান। পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য তথা পঞ্চায়েতের শিল্প ও পরিকাঠামো উপসমিতির সঞ্চালক আলি হাসান বলেন, আমি নিজেও একজন কংগ্রেস সদস্য। তারপরেও বলছি, প্রধান পুরোপুরি মর্জিমাফিক কাজ করেন। কারও কথা শুনতে চান না। প্রধান টেন্ডার নিয়ে একাধিক দুর্নীতি ও স্বজনপোষণ করেছেন। ওইসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি।
পঞ্চায়েতে বিরোধী দলনেতা জাহির শেখ বলেন, প্রধান আমাদের কথা গ্রাহ্য করেন না। এমনকী এলাকায় কী কাজ হবে, না হবে তাও কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই ঠিক করছেন। এটা চলতে পারে না। পঞ্চায়েত প্রধান মজিবুর রহমান বিশ্বাস বলেন, প্রযুক্তিগত মূল্যায়নের বিষয়টা পুরোপুরি ভাবে দেখেন পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক। পঞ্চায়েতের নিয়ম অনুসারে, এজেন্সির সঠিক কাগজ থাকলে তা গ্রহণযোগ্য ও না থাকলে সেটি বাতিল হবে, এটাই নিয়ম। তাই করা হয়েছে। আর একটি টেন্ডারে একটি এজেন্সি গ্রহণযোগ্য হয়েছে মানেই যে সেই এজেন্সি পরের টেন্ডারেও গ্রহণযোগ্য হবে, তা নাও হতে পারে। এ ক্ষেত্রেও কাগজসহ সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখা হবে। আর প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন করা হয়নি, বলে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সঠিক নয়। কারণ প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন ছাড়া ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া সম্ভব নয়। অভিযোগ যখন হয়েছে বিডিও তদন্ত করে দেখুন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক, আর ভুল প্রমাণিত হলে ওঁদের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ আনতে পারি।