• গঙ্গা-ফুলহার ফুঁসছে, কৃষিতে এবার ক্ষতি কম
    বর্তমান | ১১ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানিকচক ও চাঁচল: মালদহে ফুলেফেঁপে উঠেছে গঙ্গা ও ফুলহার। জলস্তর রোজই বাড়তে থাকায় বন্যা পরিস্থিতি মানিকচক ও রতুয়ার অসংরক্ষিত গ্রামগুলিতে। পাশাপাশি, লাগাতার চলছে গঙ্গা ভাঙন। এই পরিস্থিতিতে বাড়িঘর নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে দুর্গতদের। ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিয়েও বাড়ছে চিন্তা। তবে, চাষিরা আগাম সতর্ক হওয়ায় ফসলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবার অনেক কম বলে দাবি জেলা কৃষি দপ্তরের আধিকারিকের।

    মানিকচক ও রতুয়ার নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রতি বছর বর্ষার আগে পাট সহ বিভিন্ন সব্জি চাষ করা হয়। সেগুলি বিক্রি করে মুনাফা থেকে সারাবছর সংসার চালান চাষিরা। গত দুই বছর ধরে গঙ্গা ভাঙন ও বন্যা পরিস্থিতির কারণে ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন চাষিরা। বিশেষত মানিকচকের ভূতনি ও গোপালপুর এবং রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দটোলা ও বিলাইমারি এলাকায় ফসলের অনকে ক্ষতি হয়েছে। গত বছর ভূতনিতে বন্যা পরিস্থিতির কারণে কয়েক কোটি টাকার পাট জলে ডুবে ক্ষতি হয়েছিল। এবছরও অর্থকরী এই ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।  জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে খবর, রতুয়া ১ ব্লকের গঙ্গা ও ফুলহার নদী তীরবর্তী এলাকায় চলতি মরসুমে প্রায় ১৮০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। প্লাবনের আগেই অধিকাংশ পাট কেটে নেওয়ায় ক্ষতি অনেকটা কমেছে। এবার প্রায় ২০ হেক্টর জমির পাট কাটতে পারেননি চাষিরা। কৃষি দপ্তরের অনুমান, এক সপ্তাহের মধ্যে জল কমে গেলে ওই পাট উদ্ধার করা সম্ভব হবে। তবে, জল বেশি দিন থাকলে পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। অন্যদিকে, কৃষি দপ্তরের দাবি, মানিকচক ব্লকের নদী তীরবর্তী উত্তর ও দক্ষিণ চণ্ডীপুর এবং হীরানন্দপুরে ব্যাপক পাট চাষ হয়েছে। সেখানকার চাষিরা নদীর জল বাড়ার আগেই পাট কেটে নেওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। স্থানীয় চাষি অমিত মণ্ডল বলেন, বন্যার আশঙ্কায় আমরা আগাম পাট কাটতে শুরু করেছি। জল থাকায় বেশি মজুরি দিয়ে পাট কাটাতে হচ্ছে। তিনশোর জায়গায় পাঁচশো টাকা মজুরি দিতে হচ্ছে এবার। এতে মুনাফা কম হলেও বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছি। দপ্তর সূত্রে খবর, ওই এলাকাগুলিতে এবছর কেউ আমন ধান রোপণ করেননি। রতুয়া-১ ব্লক ও মানিকচকের নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রায় ২২ হেক্টর জমিতে সব্জি চাষ হয়। চলতি মরসুমে প্রচুর পরিমাণে পটল, শসা, করলা সহ অন্য সব্জি চাষ হয়েছিল। গত সপ্তাহে ১১০ বিঘা জমির সব্জি নষ্ট হয়েছিল বলে রিপোর্ট সংগ্রহ করে উদ্যানপালন দপ্তর। জল কমলেই কৃষকেরা ভাদ্রমাসী কলাই চাষ শুরু করবেন। সেই বীজ ব্লকে ব্লকে পৌঁছে গিয়েছে। দ্রুত বিতরণ শুরু হবে বলে দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। মালদহের উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) বিদ্যুৎ কুমার বর্মন বলেন, জল কমলেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হবে এবং নির্দেশ এলেই ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণ পাবেন। প্লাবিত এলাকাগুলিতে সবসময় নজর রাখছে কৃষি দপ্তর। 
  • Link to this news (বর্তমান)