নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: বর্ষায় উত্তরবঙ্গে প্রাণহানি রুখতে প্রচার অভিযানে নেমেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে তারা পাহাড়ে ধস, সমতলে হড়পা বান, বজ্রপাত, সাপের কামড় নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে। এদিকে, বর্ষার মরশুমে আড়াই মাসে উত্তরবঙ্গে প্রাণহানি হয়েছে ৭২ জনের। এই অবস্থায় আগামী তিন দিন পাহাড় ও সমতলে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এমন পূর্বাভাস দিয়েছে সিকিম কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা। প্রতিবছর বর্ষার মরশুমে উত্তরবঙ্গে জলেডুবে, বাজপড়ে, ধসে ও সাপের ছোবলে বেশ কিছু প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তা রুখতে পাহাড় থেকে সমতল সর্বত্র প্রচার অভিযানে নেমেছে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তর। ইতিমধ্যে তারা ব্লকে ব্লকে বৈঠক করে ধস, নদীর জলস্ফীতি, বজ্রপাত ও সাপের উপদ্রব নিয়ে সচেতন করেছেন। বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, বর্ষার সময় নদীতে নামা উচিত নয়। যেকোনও মুহূর্তে নদীগুলিতে হড়পা বান আসতে পারে। তাতে প্রাণহানি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর পাহাড়ের ধসপ্রবণ এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বজ্রপাতের সময় ঘরে বা শেডের নীচে থাকতে বলা হচ্ছে। সাপের ছোবল থেকে বাঁচতে ঝোপ, জঙ্গলে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রাতে ঘরের বাইরে যাওয়ার সময় সঙ্গে রাখতে বলা হচ্ছে টর্চ।
এবার বর্ষার ঝড়-বৃষ্টি সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃতদের তথ্য সংগ্রহ করছে উত্তরকন্যা। প্রশাসন সূত্রে খবর, বর্ষার মরশুমে ১ জুন থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে মৃত্যু হয়েছে ৭২ জনের। এমন মৃতের সংখ্যা জলপাইগুড়ি জেলায় সর্বাধিক, ২৩ জন। যারমধ্যে বাজপড়ে ও সাপের ছোবলে তিন জন করে, ধসে একজন, বাকি ১৬ জন জলে ডুবে প্রাণ হারান। মৃত্যুর নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে কোচবিহার জেলা। এখানে মৃতের সংখ্যা ১৬। উত্তর দিনাজপুর জেলায় ১১, আলিপুরদুয়ারে ১০, দার্জিলিং জেলায় ছয়, মালদহে চার এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তরের উত্তরকন্যার এক অফিসার বলেন, সাপের ছোবলে মৃতদের পরিবার ১ লক্ষ টাকা এবং বজ্রাঘাত, জলে ডুবে, ধসে মৃতদের পরিবারের সদস্য ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা পাবেন। যা প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার।