নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: পুজোয় সপরিবারে বেড়াতে গেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করবেন না। চুরি রুখতে আবেদন জলপাইগুড়ি জেলা পুলিসের। একইসঙ্গে পুজোর আগে রাস্তায়, দোকানে ও বাজারে সিসি ক্যামেরার সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্যোগী জলপাইগুড়ি পুলিস। রাস্তায় যেসব ক্যামেরা লাগানো রয়েছে, সেগুলির সবক’টি সক্রিয় কি না, তা খতিয়ে দেখার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। পুজোর বাজারে যাতে চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা না ঘটে, সেজন্য বিশেষ বাহিনী গড়ছে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিস। সাদা পোশাকের পুলিসের পাশাপাশি পুজোর মার্কেটে উইনার্স টিম মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
একইসঙ্গে পুজোর আগে ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে আরও জোর দেওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত জলপাইগুড়ি জেলায় প্রায় ১২০০ ভাড়াটিয়ার তথ্য আপলোড হয়েছে জেলা পুলিসের পোর্টালে। যেসব বাড়ির মালিক তাঁদের ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য পুলিসের পোর্টালে এখনও আপলোড করেননি, তাঁরা যাতে দ্রুত ওই কাজ সেরে ফেলেন, সেজন্য পুলিসের তরফে আবেদন রাখা হয়েছে। এনিয়ে শীঘ্রই বিশেষ অভিযানও চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিস বিভাগ।
রবিবার জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিস সুপার (সদর) শৌভনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, এখন অপরাধের ধরন বদলেছে। আগে কোনও বাড়িতে দুষ্কৃতীরা চুরির আগে সরেজমিনে এসে রেকি করে যেত। এখন সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নজর রাখে দুষ্কৃতীরা। অনেকেই কোথাও ঘুরতে গেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় স্টেটাস দেন। ছবি পোস্ট করেন। সেটা দেখেই দুষ্কৃতীরা চুরির ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করে।
প্রতিবছর পুজোর আগে বিভিন্ন শহরে চুরি, ছিনতাইয়ে বাইরের গ্যাং ঢোকে। জলপাইগুড়িও এর ব্যতিক্রম নয়। এবার পুজোর বাজারে যাতে চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আগেভাগেই সতর্ক পুলিস। এদিন অতিরিক্ত পুলিস সুপার বলেন, পুজোর মার্কেটে নজরদারি চালাতে বিশেষ টিম গড়ছি আমরা। সেখানে সাদা পোশাকের পুলিস থাকবে। সেইসঙ্গে থাকবে আমাদের উইনার্স টিম। এছাড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে আমরা আবেদন করছি, বড় দোকানগুলি যেন প্রত্যেকে সিসি ক্যামেরা রাখে। রাস্তায় যেসব ক্যামেরা লাগানো আছে, সেগুলি সব ঠিকঠাক আছে কি না সেটাও দেখছি। জলপাইগুড়ি শহরে ১১৯টি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে রাস্তায়। ওইসব ক্যামেরার ফুটেজের উপর জেলা পুলিসের কন্ট্রোল রুম থেকে সারাক্ষণ নজরদারি চালানো হচ্ছে। সোনার দোকানের সামনে আমাদের পুলিস ভ্যান নজরদারি চালায়।
ভাড়াটিয়াদের তথ্য সংগ্রহ নিয়ে এএসপি’র বক্তব্য, পাশের শহর শিলিগুড়িতে সম্প্রতি যেক’টি বড় অপরাধ ঘটেছে, সবক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে দুষ্কৃতীরা ভাড়াটিয়া বেশে ঘাঁটি গেড়েছিল। সেকারণে আমরা ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে জোর দিয়েছি। অনেকেই ভাড়াটিয়ার তথ্য পুলিসের পোর্টালে আপলোড করেছেন। যাঁদের বাকি রয়েছে, দ্রুত তাঁদের ওই কাজ সেরে ফেলতে হবে।