রাস্তা জলে থইথই, অভিভাবকদের কাঁধে চেপে স্কুলে যায় জিন্নাতুনরা
বর্তমান | ১১ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, চাঁচল: কাদার উপর ঢেউ খেলছে। পা ফেললেই হাঁটু পর্যন্ত ডুবে যায়। ফলে জল ভরা রাস্তা অভিভাবকদের কাঁধে চেপে পার হয়ে স্কুলে যাচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। কিছুদিন এমন অবস্থা চলতে থাকায় রবিবার বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা। মালদহের রতুয়া ১ ব্লকের চাঁদমুনি গ্রাম পঞ্চায়েতের খাসপাড়া গৌরীপুর বুথের ঘটনা। পথ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে মাছধরা জাল ফেলে প্রতীকী বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা।
খাসপাড়ার ওই রাস্তা দিয়ে পরানপুর, চাঁদমুনি ও ভাদো গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার যাতায়াত করে। বিশেষ করে সমস্যায় পড়ে চাঁদমুনি অঞ্চল হাইমাদ্রাসার পড়ুয়ারা। সবুজ সাথীর সাইকেল পেলেও বেহাল রাস্তার জেরে বাড়িতে রেখেই তাদের স্কুলে যেতে হয়। ছাত্রী জিন্নাতুন খাতুন বলে, হেঁটে দূরের কথা, রাস্তার যা অবস্থা সাইকেল নিয়েও যাওয়া যায় না। স্কুল ইউনিফর্ম যাতে জলকাদায় নোংরা না হয়, বাবার কাঁধে চেপেই রাস্তা পার হই।
একাধিকবার পঞ্চায়েত ও প্রশাসন স্তরে জানালেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। এদিন বিক্ষোভকারী আব্দুর রহিমের দাবি, এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছে রাস্তার আবেদন করা হলে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। প্রায় দুই কিমি রাস্তা দশকের পর দশক বেহাল। ঘরে ফসল তুলতে হলে ট্রাক্টর আসতে চায় না। বেশি ভাড়া চায় তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল আলম বলেন, এলাকায় কয়েকশো বিঘায় চাষ হয়। বেহাল রাস্তার জন্য সারা বছর চাষিদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। শুনেছি পথশ্রী প্রকল্পে রাস্তাটি ধরা হয়েছে। কিন্তু আজও কাজ হল না।
এই ঘটনায় এলাকায় অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য অভিষেক সিঙ্ঘানিয়া বলেন, উন্নয়ন হলে মানুষ পথে নামতেন না। অভিভাবকদের ঘাড়ে চেপে পড়ুয়ারা স্কুলে যাচ্ছে, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের।
পাল্টা তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বকসির মন্তব্য, ওই রাস্তাটির জন্য পথশ্রী প্রকল্পে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দু’মাসের মধ্যে কাজ হবে। বিজেপি কেন্দ্রে থেকে বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা ছাড়া আর কিছুই করেনি। বিজেপি নেতাদের লজ্জা হওয়া উচিত।
রতুয়া ১ ব্লকের বিডিও রাকেশ টোপ্পো জানান, বর্ষার পরই ওই রাস্তার কাজ শুরু হবে।