• অনলাইন জুয়ায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা খুইয়ে আত্মঘাতী যুবতী, হেমতাবাদে চাঞ্চল্য
    আজ তক | ১১ আগস্ট ২০২৫
  • মোবাইল অ্যাপে অনলাইন গ্যাম্বলিং করে সর্বস্বান্ত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন তরুণী।বাবা-মায়ের জমানো প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা উড়িয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার পর বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন এক কলেজ ছাত্রী। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ থানার ভরতপুরের তিলান গ্রামে।

    জানা গিয়েছে মৃত ছাত্রীর নাম অলকা বর্মন (২১)। তাঁর বাড়ি তিলান গ্রামেই। তিনি কালিয়াগঞ্জ কলেজের স্নাতক স্তরের কলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। শনিবার সকালে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

    মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অলকার বিয়ের পাকা কথা প্রায় হয়ে গিয়েছিল। দুর্গাপুজোর পরেই বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। এজন্য প্রায় সাড়ে তিন ভরি সোনার গয়না তৈরি করে রেখেছিলেন তাঁর অভিভাবকরা। মেয়েকে পড়ালেখা শিখিয়ে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর স্বপ্ন দেখছিলেন তাঁর মা-বাবা। কিন্তু পরিবারের আক্ষেপ, মেয়ে মোবাইলে জুয়া খেলার খপ্পরে পড়েই সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিল। অলকার মা সুফলা বর্মন জানান, কন্যাশ্রী প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা ছিল। ওই টাকা ছাড়াও তাঁর স্বামীর কৃষকবন্ধু প্রকল্পের সঞ্চিত অর্থ, তাঁর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার-এর টাকা সহ প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা জুয়ায় খাটিয়ে শেষ করে দেন তাঁর কলেজ পড়ুয়া মেয়ে। মা-বাবার অজ্ঞাতসারে তিনি এমটিএমের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে সব টাকা তুলে নেন বলে অভিযোগ। পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, অলকা কিছুদিন আগে কলকাতায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়তে গিয়েছিলেন। তারপর থেকেই তাঁর টাকার চাহিদা আরও বেড়ে গিয়েছিল। সেখানেও জুয়া খেলার জন্য একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার করেন তিনি। এরপর পাওনাদারদের সেই টাকা শোধ করতে না পেরে গত ৪ অগাস্ট তিনি হেমতাবাদের বাড়িতে ফিরে আসেন।

    অলকার মা বলেন, ‘কলকাতায় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার করেছিল মেয়ে। সেই টাকা শোধ করার ভয়েই বাড়িতে ফিরে আসে। আমরা ওকে বুঝিয়ে সৎপথে ফেরানোর চেষ্টা করছিলাম।’

    কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘরে ঢুকে বিষপান করেন অলকা। ঘটনা জানাজানি হতেই তড়িঘড়ি তাঁকে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শনিবার সকালে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। অলকার বাবা, পেশায় টাইলসমিস্ত্রি, রাজেন বর্মন আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাদের পরিবারে অলকাই ছিল প্রথম কলেজে পড়া মেয়ে। আমি যদি প্রথম থেকে মেয়েকে শাসন করতাম, সব আবদার না মেটাতাম, তাহলে এভাবে হয়তো মেয়েটা অকালে চলে যেত না।’ ঘটনায় রায়গঞ্জ থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
     

     
  • Link to this news (আজ তক)