• ‘বেঁচে থাকতে মূল্য দেয়নি, লাশের পাশেও যেন না কাঁদে’, ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে ‘আত্মঘাতী’ হাওড়ার যুবক
    প্রতিদিন | ১১ আগস্ট ২০২৫
  • অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: ‘‘আমি বেঁচে থাকতে যে মূল্য দিতে পারলো না। সে যেন আমার লাশের পাশে না কাঁদে।’’ নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেওয়ার পর ঘর থেকে উদ্ধার যুবকের ঝুলন্ত দেহ। নিহতের পরিবারের দাবি, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন শিবপুরের গোলাম হোসেন সর্দার লেনের ওই যুবক। বছর একুশের রাজা ঢালি নামে ওই যুবকের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, এভাবে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যার নেপথ্যে বছর ষোলোর এক কিশোরী।

    ওই কিশোরীর সঙ্গে যুবকের প্রায় দেড় বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই কিশোরীর আরও এক প্রেমিক আছে। প্রেম করার নামে ওই কিশোরী যুবককে নানাভাবে ব্ল্যাকমেল করত বলেই অভিযোগ। শুক্রবার বিকেলে ওই কিশোরী যুবককে ফোন করে ডাকে। তারপরই বাড়িতে এসে রাজা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন বলেই দাবি পরিবারের। আর নিজের প্রেমিকাকে উদ্দেশ্য করেই মৃত্যুর ঠিক আগে ওই যুবক ফেসবুকে এই স্ট্যাটাস দিয়ে যান।

    ব্ল্যাকমেলের অভিযোগে রবিবার যুবকের পরিবার ও প্রতিবেশীরা ওই কিশোরীর বাড়িতে চড়াও হয়। চলে ভাঙচুর। ওই কিশোরীর বাড়ি যখন ভাঙচুর হয় তখন অবশ্য তাদের বাড়ি তালাবন্ধ ছিল। কিশোরী ও তার পরিবারের লোকজন বাড়িতে ছিলেন না। যুবকের মৃত্যুর পরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান বলে দাবি স্থানীয়দের। এদিকে, এদিন ভাঙচুরের সময় খবর পেয়েই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় শিবপুর থানার পুলিশ। ওই যুবকের পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা। রবিবার ওই যুবকের দিদি জবা হাজরা জানান, শুক্রবার বিকেলে তাঁর ভাই সামনেই মাঠে ফুটবল খেলতে গিয়েছিল। বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ তাঁর ভাইকে ফোন করে ডাকে ওই কিশোরী। ওই কিশোরীর সঙ্গে দেখা করে সন্ধে ৬টা নাগাদ বাড়ি ফেরেন রাজা। বাড়িতে তখন রাজার ঠাকুমা ও বোন উপস্থিত ছিল। বোনকে ঘর থেকে বার করে দেন। ঠাকুমাকে চপ আনতে পাঠিয়ে রাজা নিজের ঘরে গিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন বলে দাবি তাঁর পরিবারের।

    পরিবারের আরও দাবি, ওই যুবক আত্মঘাতী হওয়ার আগে তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে দিয়ে যায়, ‘‘আমি হারিয়ে যেতে চাই সাদা কাপড়ের ভাঁজে। আমি বেঁচে থাকতে যে মূল্য দিতে পারলো না। সে যেন আমার লাশের পাশে না কাঁদে।’’জবাদেবীর আরও অভিযোগ, ওই কিশোরীর অনেক বয়ফ্রেন্ড রয়েছে। ওই কিশোরী নেশাও করত। তাঁর ভাই ছাড়াও অপর এক যুবকের সঙ্গে ওই কিশোরীর সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্ক থেকেই কিশোরী তাঁর ভাইকে ব্ল্যাকমেল করত। জবাদেবী রবিবার বলেন, ‘‘আমার ভাইকে ব্ল্যাকমেল করে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছে ওই কিশোরী। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’’
  • Link to this news (প্রতিদিন)