"সিপিএম কংগ্রেসও শূন্যই থাকবে, বিজেপি ৩০ পেরোবে না, চতুর্থবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা ব্যানার্জি", মন্তব্য কুণাল ঘোষের...
আজকাল | ১১ আগস্ট ২০২৫
মিল্টন সেন, হুগলি,১০ আগস্ট: নবান্ন অভিযান হলো একটা দ্বিচারিতা। হাইকোর্ট বলেছিল শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে। অথচ দেখা গেল কী সাঁতরাগাছিতে? ইট হাতে নিয়ে একজন হেঁটে যাচ্ছে। তালা ভাঙছে। যাকে দেখালাম তাঁর নাম বটোকৃষ্ণ দাস। নন্দীগ্রাম পূর্ব মেদিনীপুরে বাড়ি। বিনা প্ররোচনায় ইট নিয়ে গিয়ে তালা ভাঙতে গেছিল। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের এক অনুষ্ঠানে চুঁচুড়া রবীন্দ্র ভবনে এই মন্তব্য করেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুনাল ঘোষ।
মঞ্চে বক্তব্যে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যে সব প্রকল্প নিয়ে আসছেন সেগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া দায়িত্ব সরকারি কর্মচারীদের। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের অনেকে আছেন যাঁরা অন্তরঘাতমূলক আচরণ করছেন। সরকারকে বদনাম করার চেষ্টা করছেন। মানুষকে হয়রান করছেন। যাতে ভোট উল্টো দিকে যায়। অন্তরঘাত মূলক আচরণ করছেন। তাঁদের চিহ্নিত করুন নেতৃত্বকে জানান। আপনারাই সরকারের মুখ। আগামী ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম শুন্য, কংগ্রেসও শূন্যই থাকবে। বিজেপি ৩০ পেরোবে না। তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আবার ক্ষমতায় আসবে চতুর্থবার। আবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা ব্যানার্জি।
বিমান বন্দরে বাংলাদেশী ধৃত, প্রসঙ্গে কুণাল বাবু বলেছেন, ধরা পড়ে থাকলে তার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের। কারণ জল স্থল অন্তরীক্ষ তিনটেই হল কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাভুক্ত। মাস দুয়েক আগে আগরতলাতে ধরা পড়েছিল বাংলাদেশি রোহিঙ্গা। এখন বলছেন কলকাতা থেকে ধরা পড়েছে। এরা ঢুকলো কোথা থেকে। ত্রিপুরা থেকে। এটা সম্পূর্ণভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্ব। বিএসএফ এবং অন্যান্য এজেন্সি তাদের দায়িত্ব। কেনও সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে পারছে না। যদি কেউ বাংলাদেশে ঢুকে থাকে তাহলে ঢুকছে কি করে। নবান্ন অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ অভয়ার মাকে কোনও রকম আঘাত করেনি। বিজেপি দায়িত্বজ্ঞানহীন পরিকল্পিতভাবে মা-বাবাকে সামনে নিয়ে গেছে। আমি আগেই বলেছিলাম ওরা নানারকম অভিযোগ এবং নাটক করবে। এত ক্যামেরা, এত চ্যানেল, এত চিত্র সাংবাদিক, এত সোশ্যাল মিডিয়া, একটা ছবি কেউ পেলেন না। যেখানে সব ক্যামেরাই তাদের দিকেই তাক করা ছিল। শুভেন্দু অধিকারী সব সীমা লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশ কমিশনার কে উদ্দেশ্য করে চরম অশালীন কুৎসা মূলক কথা বলেছেন। এর দায় শুধু শুভেন্দু অধিকারীর নয়। এর দায় বিচারপতি মান্থারও। তিনি বারবার অন্যায় ভাবে তাকে রক্ষাকবচ দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলেছেন। বিভিন্ন মামলায় তাকে রক্ষাকবচ দিয়েছেন। সেই রক্ষা কবজে, ব্রহ্মার বরের মহিষাসুর যেমন বড় বড় কথা বলতেন, তারপর দুর্গার হাতে বদ হয়েছিলেন। তেমনি মান্থার বরে বলিয়ান হয়ে মহিষাসূর রুপি না কি রুপি আমি জানিনা শুভেন্দু অধিকারী কুৎসিততম কথাবার্তা বলেছেন। দেবতাদের মধ্যে ব্রম্মা প্রচুর অসুরকে ভুলভাল বর দিয়েছিলেন। সেগুলোকে কাটতে মা দুর্গা বিষ্ণু মহেশ্বর কে পরবর্তী সময়ে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। উনারা ওদের মেয়েকে হারিয়েছেন। ওনাদের প্রতি পূর্ণ সহমর্মিতা আছে। পুলিশ আঘাত করেছে, বা অসম্মান করেছে এমন একটা কোনও ছবি পাওয়া যায়নি। আমাদের আমন্ত্রণে যদি আমার বাবা-মা যেতেন আমরা তাদের বুক দিয়ে আগলে রাখতাম। ছবি তুলিয়ে সেটা দিয়ে প্রচার পেতে যেতাম না। এটা বিজেপি দল এবং বিজেপির বিরোধী দলনেতার লজ্জা। নিকৃষ্টতম রাজনীতি।
কুণাল বাবু বলেছেন, পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে। তাঁদের ধন্যবাদ প্রাপ্য। কারণ তাঁরা কোনওরকম প্ররোচনায় পা দেননি। অসংযত হননি। পুলিশ অত্যন্ত সংযত ভূমিকা পালন করেছে। পুলিশ আক্রান্ত হলেও কখনোওই পাল্টা আঘাত করেনি। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে আমরা কি দেখি, পুলিশ তান্ডব করে চলেছে। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তাঁর নামে তো বন্দর রয়েছে। শিয়ালদহ স্টেশন কেনও? স্বামী বিবেকানন্দকে সামনে রেখে শিয়ালদহ স্টেশনের নাম স্বামী বিবেকানন্দ নামে করা হোক। কারণ শিকাগো ধর্মসভায় ঐতিহাসিক বক্তৃতার পর তিনি জাহাজ থেকে ফেরার পথে শিয়ালদহ নেমেছিলেন।শিয়ালদহ স্টেশনে বিশ্বজয় এর পর এসেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। যদি নামকরণ করতেই হয় তার নামে করা হোক। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীর দুটি এপিক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরাও চাই নিখুঁত ভোটার লিস্ট। অন্য রাজ্য থেকে গাদা লোক এনে ভোটার লিস্টে নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হল, এটা করা যাবে না। আর কোনও বৈধ ভোটারকে হেনস্তা করা যাবে না।