আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পরেই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে রাজ্যের হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালেও নিরাপত্তার দিকে নজর দেওয়া হয়। কোথায় কোথায় নিরাপত্তার ত্রুটি রয়েছে, চর্চা শুরু হয় সে নিয়ে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত এক বছরে কাজ হয়েছে অনেকটাই। সর্বক্ষণের জন্য পুলিশ ক্যাম্প চালু রয়েছে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের সরিয়ে সেখানে পুলিশকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।
তবে এখনও পর্যন্ত হাসপাতালের নতুন ভবন থেকে শুরু করে নার্স আবাসন ও আবাসনে যাতায়াতের রাস্তায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়নি। ফলে, খানিক নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন নার্সেরা। তাঁদের অনেকের দাবি, অবিলম্বে নার্স আবাসন লাগায়ো এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানো হোক। এই সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আরজি কর হাসপাতালে গত বছরের ওই ঘটনার পরেই, কাটোয়া মহকুমা হাসপালের মূল ভবন কার্যত সিসি ক্যামেরা দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়। রাতারাতি পুলিশ ক্যাম্প থেকে সিভিক ভলান্টিয়ারদের সরিয়ে পুলিশকর্মী নিয়োগ করা হয়। এ ছাড়া, হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য আলাদা করে বিশ্রামকক্ষ তৈরি করা হয়। দিনের ২৪ ঘণ্টাই হাসপাতালের সর্বত্র নিরাপত্তারক্ষীরা নজরদারি চালিয়ে থাকেন। কিন্তু সে সময়ে দাবি উঠেছিল, হাসপাতালের নতুন ভবন ও নার্স আবাসন এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানো হোক। তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
কাটোয়া হাসপাতালের নার্সদের একাংশের দাবি, হাসপাতাল থেকে নার্স আবাসনে যাতায়াত করতে হয় একটি পুকুরপাড় দিয়ে কিছুটা ফাঁকা জায়গা পার করে। সন্ধ্যার পরে ওই রাস্তা দিয়ে আবাসনে যাওয়া-আসার সময়ে প্রায়ই নেশাগ্রস্তদের মুখোমুখি হতে হয়। এ ছাড়া, কোনও কোনও সময়ে নার্স আবাসন লাগোয়া জায়গায় সন্দেহভাজন লোকজনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নার্সের কথায়, ‘‘মাস সাতেক আগেও আচমকা এক নার্স আবাসনে ঢুকে কেউ দরজায় লাথি মেরে পালিয়ে গিয়েছিল। আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। হাসপাতালের নতুন ভবন ও আমাদের আবাসনে দ্রুত সিসি ক্যামেরা বসানো উচিত।’’
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার বিপ্লব মণ্ডল বলেন, “আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার পরেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজা হয়েছে। মহিলা চিকিৎসকদের জন্য আলাদা বিশ্রামকক্ষ করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের নতুন ভবন ও নার্সদের আবাসনেও সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করি, সমস্যা মিটে যাবে।’’