• 'দিদিকে উল্টোপাল্টা বলে ফেলেছি,' হঠাত্‍ সুর নরম কল্যাণের, 'হাওয়া' বুঝেই?
    আজ তক | ১০ আগস্ট ২০২৫
  • কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন, তা বুঝতে পারতেই এবার নরম সুর? এক কথায়, কল্যাণের বোধোদয়। আজ অর্থাত্‍ শনিবার কোন্নগরে যা যা বললেন, তাতে অন্তত তেমনই ইঙ্গিত। বলছেন, 'দিদিকে উল্টোপাল্টা বলে ফেলেছি, এটা না বললেই বোধ হয় ভাল হত।' 

    মহুয়া মৈত্রের উপর ক্ষোভ প্রকাশ অতীতে একাধিক বার প্রকাশ্যে করেছেন তৃণমূলের শ্রীরামপুরের সাংসদ। গত সোমবার একেবারে হেস্তনেস্ত অ্যাটিটিউড দেখান। সে দিন সাংসদদের ভার্চুয়াল মিটিংয়ে লোকসভায় সমন্বয়ের কাজ ঠিক হচ্ছে না বলে অসন্তোষ প্রকাশ করেন খোদ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার এই কথার পরেই লোকসভার মুখ্য সচেতক বা চিফ হুইপ পদে ইস্তফা দিয়ে দেন কল্যাণ। বলেন, 'দলনেত্রী যখন মনে করছেন লোকসভায় সমন্বয় ঠিক মতো হচ্ছে না, তখন তিরটা আমার দিকেই আসছে। তাই আমি ইস্তফা দিচ্ছি। আমার দরকার ফুরিয়ে গিয়েছে। এ বার দিদিই দল চালান।’ 

    মহুয়ার বিরুদ্ধে কল্যাণের বিষোদগার

    তারপরেই কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের উপর সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দীর্ঘ পোস্ট করেন কল্যাণ। পরের দিন অর্থাত্‍ মঙ্গলবারও দীর্ঘ পোস্ট করেন তিনি।  গত লোকসভা নির্বাচনে শ্রীরামপুরে কল্যাণের বিরুদ্ধে বামেদের প্রার্থী ছিলেন দীপ্সিতা ধর। সেই সময়ে দীপ্সিতা সম্পর্কে কল্যাণের নানা মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। কল্যাণের আচরণ নিয়ে মহুয়া বলেছিলেন, ‘শুয়োরের বাচ্চার সঙ্গে কখনও লড়তে নেই। সে চাইবে লড়াই করতে। কিন্তু আপনি তার সঙ্গে যুদ্ধে নামলে নোংরাটা আপনার গায়েও লাগবে। নারীবিদ্বেষী, হতাশাগ্রস্ত রাজনৈতিক নেতা সব দলেই রয়েছেন। সংসদেও তার প্রতিফলন রয়েছে।’ তাঁকে 'শুয়োর' বলা হয়েছে, এই অভিযোগে মহুয়ার বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন কল্যাণ।

    দিদি একবার নয়, তিনবার আশীর্বাদ করেছে

    সূত্রের খবর, কল্যাণের এই ধরনের আচরণ ভাল ভাবে নেননি মমতা। কল্যাণের ইস্তফাপত্রও গ্রহণ করে নিয়েছেন। আজ সেই কল্যাণ বললেন, 'বুঝতে পেরেছি মহুয়া মৈত্র এখন আমার কাছে কোনও বিষয় (সাবজেক্ট ম্যাটার) নয়। অনেক সময়, শক্তি এক জন মহিলার জন্য নষ্ট করেছি। তার জন্য অনেকের কাছে খারাপ হয়েছি। দিদিকেও উল্টোপাল্টা বলে ফেলেছি।  আমার কাছে এখন অনেক কাজ রয়েছে। আজ রাখিতে দিদিকে প্রণাম জানিয়েছি। দিদি আমাকে আশীর্বাদ করেছে। এক বার নয়, তিনবার আশীর্বাদ করেছে।'

    কল্যাণ-অভিষেক দেড় ঘণ্টা কথা

    এমনকী যে কল্যাণ কয়েক দিন আগে বলেছিলেন, তিনি নয়া মুখ্য সচেতক কাকলি ঘোষদস্তিদারকে বলবেন,তিনি পার্লামেন্টে পিছনের আসনে বসবেন, সেই কল্যাণ আজ হঠাত্‍ দাবি করলেন, 'আবার দেখা যাবে, চিন্তা করার কিছু নেই। এ বারে তো হাউসে কিছু নেই। খালি চেঁচামেচি আর বন্ধ হয়ে যাওয়া। হাতে প্রচুর কেস রয়েছে। আগামী ছ’মাস প্রচুর মামলা হবে। বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম হাতে হাত মিলিয়ে মামলা করছে। দিদির উপর যে আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করছে, সেটাকে তো রুখতে হবে।'

    অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর দেড় ঘণ্টা কথা হয়েছে বলেও জানান শ্রীরামপুরের সাংসদ। তাহলে কি অভিষেকের বার্তাতেই দু পা এগিয়ে এক পা পিছিয়ে গেলেন কল্যাণ? রাগ কমতেই কল্যাণের মনে পড়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ দেখেই ভোটটা হয়।
  • Link to this news (আজ তক)