অভয়ার মায়ের আঘাতে শুভেন্দুর দিকে আঙুল, নবান্ন অভিযানে দলেই কোণঠাসা বিরোধী দলনেতা!
প্রতিদিন | ১০ আগস্ট ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেয়ের মৃত্যুর একবছর পর সুবিচারের দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল আর জি করে নির্যাতিতার পরিবার। শনিবার, সেই প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করে অসুস্থ হয়ে পড়লেন অভয়ার মা। অভিযোগ, পার্ক স্ট্রিটে প্রতিবাদীদের আন্দোলন দমনের নামে পুলিশের লাঠির আঘাত লেগেছে তাঁর মাথায়। হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে তাঁকে। অভয়ার মায়ের এই আহত হওয়ার নেপথ্যে অবশ্য শুধুমাত্র পুলিশকে নয়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে দায়ী করলেন অভয়া মঞ্চের সদস্যরা। তাঁদের যুক্তি একটাই, দায়িত্ব নিয়ে অভয়ার মা-বাবাকে আন্দোলনে নিয়ে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। তাই তাঁদের সুরক্ষার ভার ছিল তাঁরও।
আজ অর্থাৎ ৯ আগস্ট অভয়া পরিবারের ডাকা নবান্ন অভিযান যে বকলমে বিজেপির দখলে যেতে বসেছে, তা স্পষ্ট হয়েছিল আগেই। যদিও রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য রাজনৈতিক পতাকা সরিয়ে রেখে এই অভিযানে শামিল হওয়ার জন্য সকলের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার অভয়ার বিচারের দাবিতে শহরজুড়ে বিভিন্ন জমায়েতের কোথাও তাঁকে দেখা যায়নি। দেখা যায়নি প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষদেরও। অন্যদিকে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী গুটিকয়েক অনুগামী নিয়ে পার্ক স্ট্রিটের জমায়েতে রীতিমতো নেতৃত্ব দিয়েছেন। জড়িয়েছে পুলিশের সঙ্গে ঝামেলায়। এ থেকেই স্পষ্ট, অন্তত অভয়ার বিচারের দাবি নিয়ে দলের মধ্যে একাই শুভেন্দু।
এদিন দুপুরে পার্ক স্ট্রিটে ঝামেলার পরপরই তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছিলেন, অভয়ার মা-বাবাকে নিয়ে রাজনীতি করেছে বিজেপি। অভয়ার মায়ের আহত হওয়ার নেপথ্যে তিনি নাম না করে বিজেপির তরুণ নেতা কৌস্তভ বাগচীকে দায়ী করেছিলেন। পরে প্রায় তাঁর সুরই শোনা গেল অভয়া মঞ্চের সদস্যদের বক্তব্যে।
মঞ্চের অন্যতম সদস্য জুনিয়র চিকিৎসক পুলস্ত্য আচার্যর বক্তব্য, ”আমরা গত একবছরে অভয়াদির মা-বাবাকে নিয়ে বহু মিছিল করেছি। কিন্তু কখনও এরকম কোনও ঘটেনি। যদি তেমন পরিস্থিতি তৈরি হতোও, তাহলেও জেনে রাখুন, আগে আমাদের মাথা ফাটত। তারপর অভয়াদির মা-বাবার শরীরে আঁচড় লাগত। এবার বিজেপি সেই অভিযানে শামিল হয়েছে। অথচ তাঁরা শোকাহত পিতা-মাতাকে ন্যূনতম সুরক্ষাটুকুও দিতে পারলেন না। আসলে যিনি এই অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই নেতা তো একসময়ে শাসকদলে ছিলেন। শাসকদল যদি সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেই নেতাও ব্যর্থ হবে। তাই আজ যা ঘটেছে, তাতে বিজেপি নেতাদের দায় রয়েছে। তাঁরা আসলে আন্দোলন করতে যাননি, গিয়েছেন ‘ফুটেজ’ খেতে।” অনেকের কটাক্ষ, আন্দোলনের নামে আসলে প্রচারের আলো কেড়ে নেওয়া লক্ষ্য ছিল শুভেন্দুদের। কিন্তু তা ব্যুমেরাং হয়ে এল। দলের অন্দরে একা আর বাইরে তুমুল সমালোচিত হতে হল বিরোধী দলনেতাকে।