বন্ধ হাওড়া ব্রিজ, দ্বিতীয় হুগলি সেতু, নবান্ন অভিযানে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা, শহরে যান চলাচল নিয়ে বিরাট আপডেট...
আজকাল | ১০ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: শনিবার নবান্ন অভিযানকে ঘিরে শহর কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করল কলকাতা পুলিশ। কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার ভার্মা বৈঠক করার পর লালবাজারের তরফে শহরে যান চলাচল নিয়ে এক বিবৃতি জারি করা হয়। জানানো হয়েছে, শনিবার ভোর ৪টে থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শহরে সব ধরনের পণ্যবাহী যানবাহনের চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। শুধুমাত্র জরুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীবাহী গাড়ি (যেমন—এলপিজি, পেট্রোল-ডিজেল, অক্সিজেন, দুধ, ওষুধ, শাকসবজি, ফল ইত্যাদি) এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। যে সব এলাকায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে তারও একটা তালিকা দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশের তরফে।
জানানো হয়েছে, বিদ্যাসাগর সেতু এবং ব্রিজের র্যা ম্পগুলি, খিদিরপুর রোড, তারাতলা রোড, ডি.এইচ. রোড, সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোড, গার্ডেনরিচ রোড, হাইড রোড, কোল বার্থ রোড, রিমাউন্ট রোড, এবং সংযুক্ত সব ফিডার রোড বন্ধ থাকছে। যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে জওহরলাল নেহরু রোড, আর.আর. অ্যাভিনিউ, রেড রোড, নিউ রোড, ডাফরিন রোড, মায়ো রোড, আউটরাম রোড, খিদিরপুর রোড, হাসপাতাল রোড, লাভার্স লেন, কুইন্সওয়ে, কাজুয়ারিনা অ্যাভিনিউ, ক্যাথেড্রাল রোড, এজে সি বোস রোড, এস.এন. ব্যানার্জি রোড, ওল্ড কোর্ট হাউস স্ট্রিট, কাউন্সিল হাউস স্ট্রিট, কিংসওয়ে, সেন্ট জর্জেস গেট রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, এমজি রোড, স্ট্র্যান্ড ব্যাংক রোড, কে.কে. ঠাকুর স্ট্রিট, কালাকার স্ট্রিট, ব্রাবোর্ন রোড এবং হাওড়া ব্রিজ।
এদিন সকালে হাওড়া ব্রিজ বন্ধ করে দেওয়ার পর বহু মানুষকে দেখা যায় গাড়ি নিয়ে আটকে পড়তে। ব্রিজের দুই মাথাতেই লোহার গার্ডরেল দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। কিছু মানুষকে দেখা গিয়েছে হেঁটে পার হতে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে পুলিশ প্রহরা। হাওড়া ব্রিজের ওপরেই নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন রূপেশ কুমার। লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে যেকোনও আর্টেরিয়াল রোড ও ফিডার রোড থেকেও পণ্যবাহী যান ও অন্যান্য যানবাহনকে ট্রাফিক পুলিশ ডাইভার্ট করতে পারবে। উল্লেখ্য, নবান্ন অভিযান ও অভয়া মঞ্চ থেকে ঘোষিত কালীঘাট অভিযানের প্রেক্ষিতে রাজ্য হাইকোর্ট এবং রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি হয়েছে।
বুধবার ভবানী ভবনে এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা (এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার, এডিজি (ল অ্যান্ড অর্ডার) জাভেদ শামীম, কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা এবং হাওড়া পুলিশ কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠী) একত্রে জানান— নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় কোনো জমায়েত বা মিছিল সম্পূর্ণ ভাবে বেআইনি। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী দুটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, প্রতিবাদ সাংবিধানিক অধিকার হলেও তা আইনের মধ্যে থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে করতে হবে। সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি, আইন ভাঙ্গা বা হিংসা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নবান্ন সংলগ্ন এলাকা অত্যন্ত সংবেদনশীল, সেখানে কোনও জমায়েত বা মিছিল করা যাবে না।
রাজ্য প্রশাসন চাইলে একাধিক আইনানুগ ব্যবস্থা ও নির্দেশ নামা জারি করতে পারে, সেটা সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের আইনশৃঙ্খলার বিষয়। পুলিশ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও সংগঠন বা রাজনৈতিক দল এখনো পর্যন্ত পুলিশের কাছে আবেদন জমা দেয়নি। গতবার যারা নবান্ন অভিযান করেছিল, তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে, তারা এবছর কর্মসূচিতে নেই বলে জানিয়েছে। দুটি নির্ধারিত এলাকা ছাড়া অন্য কোথাও মিছিল করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই নির্ধারিত এলাকা হল— হাওড়ায় সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ড (হাওড়া CP-এর আওতায়) এবং কলকাতায় রানী রাসমণি এভিনিউ (কলকাতা পুলিশ কমিশনারের আওতায়)।