স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েও শান্তি হল না, তারপর স্বামী যা করলেন, তাতে শিউড়ে উঠলেন সকলে...
আজকাল | ১০ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে দিয়ে তাঁকে 'শায়েস্তা' করতে চেয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে মুর্শিদাবাদের ইসলামপুর থানা এলাকার গোপীনাথপুর গ্রামে। ঘটনার খবর পেয়ে ইসলামপুর থানার পুলিশ গিয়ে ওই মহিলার বাড়ির গোয়াল ঘর থেকে তাঁর প্রাণহীন দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে। অন্যদিকে দেহ উদ্ধারের পর অভিযুক্ত স্বামী নিজের নাবালিকা কন্যাকে নিয়ে পলাতক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কয়েক আগে হালিমা বিবি নামে ওই মহিলার সঙ্গে গোপীনাথপুরের বাসিন্দা রুবেল শেখের বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের একটি বছর তিনেকের কন্যা সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি রুবেল স্থানীয় অন্য এক মহিলার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ। স্বামীর এই সম্পর্কের কথা জেনে যাওয়ার পর থেকে হালিমার সঙ্গে রুবেলের প্রায়শই অশান্তি হত।
মৃত হালিমার এক আত্মীয় বলেন, সম্প্রতির রুবেল হালিমাকে ছেড়ে দিয়ে ওই মহিলাকে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু হালিমা তাতে রাজি না হওয়ায় প্রায় প্রত্যেকদিন তাঁকে মারধর করতেন রুবেল।
তিনি বলেন, স্ত্রীকে সকলের সামনে অপমানিত করার জন্য দু'মাস আগে রুবেল হালিমাকে মারধর করে মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছিলেন। এই ঘটনার পর হালিমা বেশ কিছুদিন শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে ছিলেন।
মৃতের পরিবার সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অতি সম্প্রতি হালিমা আবার রুবেলের বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন। শনিবার সকালে হালিমার পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন রুবেল তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে দেহ বাড়ির গোয়াল ঘরে ফেলে রেখে নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছেন।
ফেরদৌসী বেগম নামে মৃত ওই মহিলার এক আত্মীয় বলেন, 'হালিমার উপর রুবেলের অত্যাচার গত পাঁচ মাসে প্রচন্ড বেড়ে গিয়েছিল। প্রত্যেকদিন হালিমাকে গালিগালাজ এবং মারধর করতেন রুবেল।' তিনি জানান, 'একাধিকবার আমরা গোটা ঘটনা থানায় জানিয়েছিলাম। এমনকী রুবেলের কীর্তির কথা থানার আধিকারিকদেরও বলে দিয়েছিল তাঁদের ছোট্ট মেয়ে। আমাদের সন্দেহ পুলিশের সামনে যাতে খুনের কথা না বলতে পারে, তাই নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছেড়েছেন রুবেল।'
ইসলামপুর থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তাঁরা গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। অভিযুক্ত রুবেলের সন্ধানে তল্লাশি শুরু হয়েছে। মৃত ওই মহিলা দেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত এপ্রিল মাসে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ থানার অন্তর্গত ইসলামপুর গ্রামে আরও একটা চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ঘটেছিল। মঙ্গলবার রাতে ওই মহিলার শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁর প্রাণহীন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই মহিলার নাম ফাতেমা খাতুন (২০)। এই মৃত্যুর ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই ওই মহিলার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
রঘুনাথগঞ্জ থানার অন্তর্গত তেঘরী হাজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ফাতেমা খাতুনের সঙ্গে মাত্র এক বছর আগে ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা পেশায় মুহুরী ইজাজ আহমেদের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের সময় ফাতেমার পরিবারের তরফ থেকেই ইজাজকে তাঁর দাবি মত পণ দেওয়া হলেও অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির কাছ থেকে তাঁর বিভিন্ন জিনিসের দাবি কখনওই মেটেনি।
মৃত মহিলার পরিবারের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে ফের একবার বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য ফাতেমাকে চাপ দিচ্ছিল ইজাজ। সেই টাকা না আনতে পারায় মঙ্গলবার খুন করা হয়েছে ফাতেমাকে।