রাজ্যে ফের খুন তৃণমূল নেতা, এবার ভরা বাজারে গুলি করে খুন করা হল যুব নেতাকে...
আজকাল | ১০ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিনের আলোতেই গোলাগুলির শব্দে কেঁপে উঠল এলাকা। ভরা বাজারে গুলি করে খুন করা হল তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলেকে। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহারের ডোডেয়ার হাট এলাকায়। মৃত অমর রায়ের (৩০) সঙ্গে এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও একজন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বিরাট পুলিশ বাহিনী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরনো বিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে তাঁদের অনুমান। এদিন তার জেরেই অমর রায়ের সঙ্গে কয়েকজনের তর্কাতর্কি বেধে যায়। বচসা চলাকালীন আচমকাই দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলি সরাসরি গিয়ে লাগে অমরের মাথায়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। অন্যদিকে আরেকটি গুলি লাগে অপর একজনের পায়ে। তিনিও লুটিয়ে পড়েন মাটিতে। ঘটনাস্থল থেকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে দু'জনকেই নিয়ে যাওয়া হয় কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে। সেখানে চিকিৎসকরা অমরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অপর আহতের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও সে এখন চিকিৎসাধীন। এই ঘটনার পরেই প্রাক্তন সাংসদ ও কোচবিহারের তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায় সামাজিক মাধ্যমে জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতা তথা ডাউয়াগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলে অমর রায়ের মৃত্যু। অতি সত্বর এর পিছনে কারা বা কী কারণ খুঁজে বের করুক পুলিশ প্রশাসন।
ঘটনার পরেই গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ডোডেয়ার হাট ও আশেপাশের এলাকায় দোকানপাট মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যায়। এলাকায় জায়গায় জায়গায় ছোট ছোট জটলা দেখা যায়। আতঙ্কিত বাসিন্দাদের কথা, দিনের আলোয় এরকম ঘটনার কথা ভাবাই যায় না। অন্যদিকে এলাকায় চলে আসে বিরাট সংখ্যক পুলিশ বাহিনী। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে যেভাবে ঘটনাটি ঘটেছে তাতে তাদের মনে হয়েছে দুষ্কৃতীরা একেবারে তৈরি হয়েই ঘটনাস্থলে এসেছিল। পাশাপাশি তাদের ধারণা, অমরের উপরে নজরদারিও চালাচ্ছিল আততায়ীরা। যদিও দুষ্কৃতীরা কারা এবং কী উদ্দেশ্যে এই খুন তা জানতে তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এখনও এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
এবিষয়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানান, আজ দুপুর বেলা অমর রায় ও তাঁর সঙ্গে একজন ডোডেয়ার হাট এলাকায় এসেছিলেন। সেই সময় বাইকে করে এসে দুজন দুষ্কৃতী তাঁদের গুলি করে। সেই সময় একজনের পায়ে গুলি লাগে। আর একজন মারা যান। একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অমর রায় মারা যান। পুরো ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল নেতাদের উপর নেমে এসেছে আক্রমণ। দক্ষিণ ২৪ পরগণার ভাঙরে একটি বাজারের কাছে বাড়ি ফেরার পথে গুলি করে খুন করা হয় এক তৃণমূল নেতাকে। গুলির পাশাপাশি ওই নেতাকে কোপানো হয় বলেও অভিযোগ। এই ঘটনার পর হুগলির কোন্নগরে নিজের এলাকায় নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয় পিন্টু চক্রবর্তী ওরফে মুন্না নামে স্থানীয় কানাইপুর পঞ্চায়েতের এক সদস্যকে। ওই ঘটনার পর পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছিল জমি নিয়ে বিবাদের জেরে খুন হতে হয়েছিল ওই নেতাকে। ঘটনায় উঠে আসে একসময় কোন্নগরের ত্রাস বাঘা'র ভূমিকার কথা। এই চক্রের সঙ্গে আরও কে বা কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের শুরুতেই মালদায় খুন হন স্থানীয় ইংলিশবাজার পুরসভার কাউন্সিলর দুলাল সরকার ওরফে বাবলা। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় ইংলিশবাজার এলাকার একসময়কার দাপুটে তৃণমূল নেতা নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি।