হরিয়ানার গুরুগ্রামের পরে এ বার উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় পৌঁছে গেলেন পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম। নয়ডায় বসবাসকারী পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সামিরুলের দাবি, নয়ডাতেও পরিযায়ী শ্রমিকদের মনেও সেই একই আতঙ্ক রয়েছে।
বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার এবং হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার জন্যই তাঁদের সঙ্গে এই আচরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। পর পর এই অভিযোগগুলি নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে সরব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। এমন অবস্থায় রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে ঘুরে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাস্তব পরিস্থিতির খোঁজখবর নিচ্ছেন। শুক্রবার তিনি ছিলেন গুরুগ্রামে। সেখানে পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সবরকম ভাবে তাঁদের পাশে থাকার বার্তাও দেন। শনিবার দিল্লি লাগোয়া আর এক বিজেপিশাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূল সাংসদ।
সামিরুল সমাজমাধ্যমে জানান, গুরুগ্রাম থেকে তিনি নয়ডায় পৌঁছেছেন। জায়গা বদল হলেও, পরিস্থিতি সেই একই রয়েছে। নয়ডার প্রতিটি কোনায় সেই একই উদ্বেগ রয়েছে বলে দাবি সামিরুলের। তিনি সমাজমাধ্যমে লেখেন, “বাঙালি-বিরোধী আচরণ এখানে এতটাই গভীরে গেঁথে রয়েছে যে, উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার মাছ খাওয়াও নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এটা কেমন অদ্ভুত বিষয়? কারও পোশাক বা খাদ্যাভ্যাসে হস্তক্ষেপ না করার শিক্ষা নিয়ে আমরা বড় হয়েছি। কিন্তু এখানে বাঙালি সংস্কৃতির অপরিহার্য মাছ-ভাতকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।”
পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যানের দাবি, সেখানে এক মহিলার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ওই মহিলা তাঁকে জানান, বাংলায় কথা বলার জন্য সেখানে তাঁদের সঙ্গে কুকুরের মতো আচরণ করা হয়। সামিরুল সমাজমাধ্যমে লেখেন, মহিলার থেকে এ কথা শুনে লজ্জায় তাঁর মাথা নত হয়ে গিয়েছে। তিনি লেখেন, “তাঁরা আমাদের সহ-নাগরিক। এ দেশে যেখানে ইচ্ছা, সেখানেই তাঁদের বসবাস করার অধিকার আছে। কেউ তাঁদের থেকে সেই অধিকার কেড়ে নিতে পারবেন না। আমরা শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত লড়ব। শুধু বাংলায় কথা বলার জন্য কি এই নিষ্ঠুর আচরণ সহ্য করতে হবে? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মাটি কেন এত অপমান সহ্য করবে? আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। এরা প্রত্যেকে দেশের প্রধানমন্ত্রীর মতোই ভারতীয়।”