বিচ্ছিন্ন সেন্ট্রাল ডুয়ার্স, ধসে বন্ধ জাতীয় সড়ক, জলের ধাক্কায় দুই বঙ্গে মৃত দুই...
আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রবল বর্ষণে ক্ষিপ্ত তিস্তা–সহ উত্তরবঙ্গের অন্যান্য নদীগুলি। সেই সঙ্গে ভুটান থেকে জল এসে ঢুকছে উত্তরবঙ্গে। এই জলের দাপটে এবার বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে কালচিনি ব্লকের সেন্ট্রাল বা মধ্য ডুয়ার্সের এলাকা। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে অসহায়ভাবে ঘরবন্দি সেখানকার মানুষ।
পানা, বাসরা ও কালিঝোরা। সেন্ট্রাল ডুয়ার্সের এই নদীগুলির পাশে রয়েছে চা বাগান ও বসতি। ভুটান সীমান্তের গা ঘেঁষা। ভুটান থেকে আসা জলের জন্য সবকটি নদীতেই বেড়ে গিয়েছে জলের পরিমাণ। অন্যসময় পায়ে হেঁটে এই নদীগুলি পেরনো গেলেও প্রবল বৃষ্টিতে সে কথা মাথাতেই আনা যাবে না। ঘুরপথে যাতায়াতের রাস্তাও জলের দাপটে বন্ধ। ফলে বলতে গেলে এই এলাকার জনজীবন স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে মেচপাড়া এলাকার এক বাসিন্দার। কালচিনি থানার পুলিশ তাঁর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ভরা নদীতে পড়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এর পাশাপাশি খোলার পরেও ফের বন্ধ করে দেওয়া হল ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের মধ্যে সংযোগ রক্ষাকারী এই রাস্তা শনিবার সকাল থেকেই বন্ধ রাখা হয়েছে। ধসের কারণে এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ি এলাকায় এই রাস্তাটি তাঁদের ‘লাইফলাইন’। জায়গায় জায়গায় ধসের কারণে যা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় প্রশাসন। ধসের ঘটনা ঘটেছে মিড়িক থেকে কার্শিয়াং যাওয়ার পথেও। এই দুই এলাকার সংযোগকারী মূল রাস্তায় ধসের ফলে রাস্তায় গাছ পড়ে যায়। সেখানে শুরু হয়েছে গাছ কেটে সরিয়ে ফেলে ধস মেরামতের কাজ। শুক্রবার রাতভর টানা বৃষ্টিতে শনিবার ২৯ মাইলেও ফের ধস নামে।
সমস্ত গাড়িগুলিকে সেবক দিয়ে গরুবাথান হয়ে আলপাড়া হয়ে বিকল্প পথে সিকিম পাঠানো হচ্ছে। যানবাহনের চাপে ওই রাস্তায় তৈরি হচ্ছে প্রবল যানজট। এই পরিস্থিতিতে মার খাচ্ছে পর্যটন ব্যবসা। বাংলা থেকে সিকিমে পর্যটকদের নিয়ে যাওয়ার অন্য বছরের এই সময় প্রচুর ব্যস্ততা থাকে গাড়ির মালিকদের। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁদের ব্যবসা বিরাট ক্ষতির মুখোমুখি। স্থানীয়দের দাবি, তিস্তার রুদ্র রূপ এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। যত্রতত্র পাহাড় কেটে নির্মাণ, নদীর ধারে রিসর্ট বা হোটেল তৈরির জন্য পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যার জেরে ঘটছে এই অতিবৃষ্টি বা প্লাবনের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়।
এর পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরের জলমগ্ন ঘাটালে উদ্ধার করা হয়েছে এক নিখোঁজ পরিবহন কর্মীর দেহ। মৃত রাজীব সিংহ (৪৫) বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার তিনি বাড়ি থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় তাঁর পরিজনরা ঘাটাল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। শুক্রবার তল্লাশি চালিয়ে এনডিআরএফ কর্মীরা ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে বন্যার জলে কোনওভাবে আটকে গিয়ে তলিয়ে যান রাজীব। দেহ উদ্ধারের পর পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।