• ম্যাট্রিমনি সাইটে আলাপ, তরুণীর ডাকে ছুটেছিলেন সোজা হোটেলের ঘরে, খাস কলকাতায় তরুণের সঙ্গে যা হল….
    আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: অনলাইন ম্যাট্রিমনি সাইটে আলাপের পর সরাসরি সাক্ষাতের নামে ডেকে এক ব্যক্তিকে চায়ে মাদক মিশিয়ে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুটের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল মহিলার বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জিয়া সিং নামে এক মহিলার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল নিউ ব্যারাকপুরের লেনিনগড়ের বাসিন্দা সুদীপ বসুর। জানা গিয়েছে, গত জুলাই মাসের ১ তারিখে তাঁদের আলাপ হয় বাংলা ম্যাট্রিমনি সাইটের মাধ্যমে। এরপরেই ওই মহিলা তাঁকে সরাসরি সাক্ষাতের প্রস্তাব দেন। সুদীপ গত ২৬ জুলাই দমদম এয়ারপোর্ট সংলগ্ন একটি হোটেলে যান ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করার জন্য। সেখানে ওই মহিলা তাঁকে চা খাওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু চা পান করার পরেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন সুদীপ।

    যখন জ্ঞান ফেরে তখন তিনি দেখতে পান তাঁর মানিব্যাগ, মোবাইল ফোন সহ সমস্ত কিছু চুরি হয়ে গেছে। ঘটনার পর ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ওই ব্যক্তি। শেষপর্যন্ত তিনি গত ২৭ জুলাই বিমানবন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নেমে ওই মহিলাকে ধরার জন্য ফাঁদ পাতে পুলিশ। ম্যাট্রিমনি সাইট থেকে মহিলার নম্বর সংগ্রহ করে ফের দেখা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

    অভিযুক্ত মহিলা আড়াই নম্বর এয়ারপোর্ট গেট এলাকায় দেখা করতে এলে পুলিশ তাঁকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। পরদিন অভিযুক্তকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হয় এবং পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত মহিলা জানায়, চুরি করা মোবাইল ফোন বাংলাদেশে পাচার করতেন তিনি। সেই মোবাইল বিক্রি করতেন মাহমুদুল হাসান নামে এক ব্যক্তির কাছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির বাড়ি রাজশাহীর বাঘা এলাকায়। পুলিশ এই তথ্যের ভিত্তিতে গত ৩০ জুলাই দমদম রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে মাহমুদুল হাসানকে গ্রেপ্তার করে।

    ইতিমধ্যেই, ওই ব্যক্তিকে ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, ওএলএক্স অ্যাপের মাধ্যমে জিয়া সিংহের সঙ্গে মাহমুদুলের পরিচয় হয়েছিল। তিনি জানিয়েছেন, মহিলার কাছ থেকে অন্তত ১০টি মোবাইল ফোন সংগ্রহ করেছেন তিনি। পরে তা বাংলাদেশে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেছেন। ফোন সংগ্রহ করতে ভারতে আসার সময় তিনি বিভিন্ন গেস্ট হাউসে থাকতেন। এবার তিনি পার্ক স্ট্রিটের এক গেস্ট হাউসে ছিলেন তিনি। পুলিশ ফাঁদ পেতে তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনায় পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পুরো চক্রটির সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে তদন্ত এখনও চলছে। অভিযুক্ত মহিলা ও তার সহযোগীকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বিমানবন্দর থানার পুলিশ।

    প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে এই ম্যাট্রিমনি সাইটের মাধ্যমেই বড়সড় সাইবার প্রতারণার শিকার হন হুগলির এক তরুণী। ম্যাট্রিমনি সাইটে ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়েছিল এক যুবক। তার সঙ্গেই বিয়ের কথা চলছিল। মাঝপথে তরুণীর পরিবারের থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে গায়েব সে। মাথায় হাত গোটা পরিবারের। ম্যাট্রিমনি সাইটে ওই যুবক ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। বিয়ের কথাবার্তা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতানোর পরিকল্পনাও ছিল। এই কাজে তাকে সাহায্য করেছে আরও একাধিকজন। পুলিশ জানায়, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের ম্যানেজার হিসাবে তরুণী ও তাঁর পরিবারকে পরিচয় দিয়েছিল ওই প্রতারক। ঘটনায় মামলা রুজু করে তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ।
  • Link to this news (আজকাল)