আজকাল ওয়েবডেস্ক: রোজ রাতের মতোই মঙ্গলবার রাতে এলাকা টহল দিচ্ছিল ট্যাংরা থানার পুলিশ। সিল লেনের গলিটার কাছে যেতেই ভেসে আসে চেঁচামেচির আওয়াজ। কী ঘটেছে দেখতে এগিয়ে যেতেই থানার আধিকারকরা দেখতে পান আগ্নেয়াস্ত্র হাতে চোঁ চোঁ করে ছুটে পালাচ্ছেন এক ব্যক্তি। তৎক্ষণাত ওই ব্যক্তিকে ধাওয়া করে আটক করা হয়। তারপরেই সামনে আসে অবাক করা কাণ্ড। ট্যাংরা থানার পুলিশের তৎপরতায় বড়সড় একটি ঘটনা ঘটার আগেই রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত রাত সওয়া ১২টা নাগাদ। নিয়মিত টহলের সময় সিল লেনের ৯/এইচ/৬/২ নম্বরের কাছে পৌঁছতেই, হঠাৎ চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে তাঁরা ঘটনাস্থলের দিকে এগিয়ে যান। তখন তাঁরা দেখতে পান, এক ব্যক্তি ডান হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ আধিকারিকরা প্রায় ১০০ মিটার ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলতে সক্ষম হন। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত ব্যক্তির নাম ভোলানাথ কর। বয়স ৪৯ বছর। এন্টালির বাসিন্দা। তাঁর কাছ থেকে একটি লোহার তৈরি দেশি এক নলা বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। সেচির ভিতরে একটি জীবন্ত কার্তুজও ছিল।
এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেন, ওই ব্যক্তি এলাকারই এক মহিলাকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখাচ্ছিলেন। পুলিশ জানতে পারে, ওই মহিলার ছেলে এবং অভিযুক্তের মেয়ে বেশ কিছু দিন ধরে সম্পর্কে ছিলেন। সেই সম্পর্ক সম্প্রতি ভেঙে যায়। সেই থেকেই এই গণ্ডগোলের সূত্রপাত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু ধরেই সম্পর্কে ছিলেন ওই যুগল। চার মাস আগে তাঁদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার এত দিন পর হঠাৎ যুবকটির বাবা ওই তরুণীর বাড়িতে এসে তাঁর মাকে হুমকি দেন যে, দু’জনের বিয়ে দিতে হবে। নইলে মা এবং ছেলে, দু’জনকেই প্রাণে মেরে নিজেও আত্মঘাতী হবেন।
পরে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ওই এলাকারই বাসিন্দা অপর্ণা দে। তিনি জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁর ছেলের সঙ্গে নিজের মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে বিরক্ত ছিলেন। সেই কারণেই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার এতদিন পরেও আগ্নেয়াস্ত্র হাতে এসে তাঁকে ভয় দেখাতে চেয়েছিলেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে ট্যাংরা থানায় বুধবার ভারতীয় অস্ত্র আইন ২৫(১বি)(এ)/২৯ এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ধারা ৩৫১(২) অনুযায়ী মামলা রুজু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত ভোলানাথ কর-কে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হয়। আদালত তাঁকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনার নেপথ্যে শুধু প্রেমঘটিত সমস্যা না কি অন্য কোনও কারণ আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই ব্যক্তির কাছে অস্ত্র আসল কোথা থেকে সেই খোঁজও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ