খাস কলকাতায় সমকামী অ্যাপ থেকে প্রতারণার ছক, পুলিশের জালে তিন
আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: কলকাতায় ফের প্রতারণার ফাঁদ। রাহুল নামে দক্ষিণ কলকাতার এক নামী বেসরকারি সংস্থার চাকুরিজীবী এবার এই ফাঁদের শিকার। রাহুলের বয়স তিরিশের কোটায়। একাকী জীবন, নিজের মতো করে বাঁচার চেষ্টা। আধুনিক যুগে সম্পর্ক খুঁজতে সে ভরসা রেখেছিল একটি অ্যাপে। সেখানে পেয়েছিল সমকামী এক সঙ্গী।
১৭ই জুলাই সকালে রাহুলের সঙ্গে এক ব্যক্তির পরিচয় হয় অ্যাপে। সে তার নাম বলে আশিষ। মিষ্টি করে কথা বলে সে। তার কথায় যথেষ্ট বিশ্বাস জন্মায় রাহুলের। কিছুক্ষণের মধ্যেই বলে দেখা করতে। জায়গা হিসেবে বলে গুরুসদয় রোডকে।
রাহুল সাহস করে যায়। সেখানে ছেলেটি অপেক্ষা করছিল। চোখে-মুখে আত্মবিশ্বাস, ব্যবহারে সহজ স্বাভাবিকতা। সে বলে, “চলো, একটু নিরিবিলি জায়গায় যাই।” রাহুল, সন্দেহ না করে, চলে যায় তার সঙ্গে ৫, বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের একটি পুরনো পরিত্যক্ত ঝুপড়িতে। আর সেখানেই শুরু হয় এক ভয়ানক অধ্যায়।
হঠাৎ করে ঘরের ভিতর ঢুকে পড়ে আরও দুই যুবক। দরজা বন্ধ করে দেয়। রাহুলকে ঘিরে ধরে তারা। একাধিকবার হুমকি দেয়, ছবি তোলে, ভয় দেখায়– “তোর পরিবার জানলে কী বলবে? সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেবো।”
রাহুল ভয়ে ঘেমে উঠেছিল। ভয়ে কাঁপতে থাকে। তখন রাহুল বলে, “তুমি যা বলো, আমি করব,”। এরপর নিজের ফোন থেকেই সে অনলাইন ট্রান্সফার করে ৯৬,৮৮৮ টাকা। মোট তিনটি ভিন্ন অ্যাকাউন্টে টাকা দেয় সে। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রাহুল ছুটে আসে বালিগঞ্জ থানায়। সেখানে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ তাদের গোপন সূত্রে তথ্য অনুযায়ী তদন্তে নামে এবং হাতে আসে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
এরপর ২৯ জুলাই রাত ১টা ১৫ মিনিটে পুলিশের একটি টিম হানা দেয় এস. এন. রায় রোডে। সেখান থেকে গ্রেফতার হয় প্রথম অভিযুক্ত। তার নাম বিজয় স্টিফেন সিংহ। সে সেই ঝুপড়ির মালিক এবং গ্যাংয়ের মূল পান্ডা। এরপর পুলিশে জিজ্ঞাসাবাদে তার জবানবন্দিতে উঠে আসে আরও দুটি নাম। সেখান থেকে ইরফান আহমেদ এবং মহম্মদ ওয়াজেদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর বাকিদের বেনিয়াপুকুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করে আদালতে তোলা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাহুল আজও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তবে বলা বাহুল্য রাহুলের এই সাহসিকতার কারণে তিনজন দুষ্কৃতী ধরা পড়েছে। এই ঘটনার পিছনে কারা রয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।