• চলতি বছরে দেখা নেই পদ্মার ইলিশের, মুখ ভার ভোজনরসিক বাঙালির
    আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বর্ষায় সময় ইলিশ খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ কম রয়েছে। ইলিশের নানা পদ আপনার রান্নাকে করে তুলতে পারে অসাধারণ। তবে চলতি বছরে সেখানেই তৈরি হয়েছে সমস্যা। বাংলাদেশের ইলিশ সেভাবে আসছে না কলকাতার বাজারে। সেখান থেকে গুজরাট এবং মায়ানমার থেকে যে মাছ আসছে তা দিয়েই এবার কাজ চালাতে হচ্ছে কলকাতাবাসীকে।

    ডায়মন্ড হারবার বা দীঘা থেকে যে ইলিশ আসছে তার দাম রয়েছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকার মধ্যে। গুজরাট থেকে যে ইলিশ আসছে তার দাম রয়েছে ৯০০ থেকে ১৪০০ টাকার মধ্যে। মায়ানমার থেকে যে ইলিশ আসছে তার দাম রয়েছে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে যে ইলিশ আসত তার দাম ছিল ১৮০০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে।

    হাওড়ার এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমানে হিমঘরে ৬২৫ টন মায়ানমারের ইলিশ রাখা আছে। সেগুলি দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। অন্যদিকে কলকাতার এক বাজারের মাছ বিক্রেতা জানিয়েছেন যে ইলিশ আসছে সেগুলি ৪৫০ থেকে শুরু করে ৫০০ গ্রাম। এগুলি সবই ৬০০ থেকে ৮০০ টাকার বিক্রি হচ্ছে। যদি কোনও মাছের ওজন ১ কেজি হয় তাহলে তার দাম হতে পারে ১৮০০ টাকা কেজি।

    ঐতিহ্যগতভাবে পদ্মার ইলিশ পুজোর আগে কলকাতার বাজারে চলে আসে। সেগুলি সবই ১৮০০ থেকে ২২০০ টাকা কেজি দাম থাকে। তবে সেদিক থেকে দেখতে হলে আরব সাগর থেকে যে ইলিশ মাছ আসছে তার স্বাদ তেমন ভাল নয়। 

    বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করলে সেখান থেকে এবারে কলকাতার বাজারে পদ্মার ইলিশ খুব একটা দেখা মিলবে না। সেখান থেকে এই মাছের স্বাদ পাবেন না বাঙালিরা। যদিও পশ্চিমবঙ্গের মৎস্য বিভাগের মন্ত্রী বিপ্লব রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এখানে মাছ আনতে চাইছেন। তবে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে তারা চিন্তায়। দেখা যাক শেষ সময়ে কী হয়।

    অন্যদিকে দীর্ঘ প্রায় এক মাস খরার পর মৎস্যজীবীদের জালে ধরা পড়ল ইলিশ । আর এক-দুই নয়, প্রায় ৪০০ টন ইলিশ নিয়ে নামখানা, কাকদ্বীপ থেকে হেনরি বন্দরে ফিরেছে ট্রলারগুলি । এরপর সেখান থেকে ইলিশ মাছগুলি আনা হয় ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজার মাছের আড়তে ৷ ওখান থেকে চলে যাবে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে ৷

    গত জুন মাসের ১৪ তারিখ রাত থেকে ট্রলারগুলি মাছ ধরার উদ্দেশ্যে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল । প্রথম এক সপ্তাহ মৎস্যজীবীদের জালে ভালো ইলিশ মাছ ধরা পড়ে । কিন্তু এরপর থেকেই সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠে । প্রায় এক মাস আর ইলিশের দেখা মেলেনি । এই পরিস্থিতিতে ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন মৎস্যজীবীরা । তার মধ্যে বারবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘোষণায় গভীর সমুদ্রে যাওয়ামাত্রই ফিরতে হচ্ছিল তাঁদের । তবে এবারে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘোষণা হওয়ার পর বাড়ি ফেরার আগে জালে পড়েছে প্রচুর ইলিশ ৷ আর এত পরিমাণ ইলিশের দেখা মিলতে মৎস্যজীবীদের মুখে চওড়া হাসি ।

    নিম্নচাপের কারণে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য দফতর । সেই নির্দেশ মেনে গভীর সমুদ্র থেকে উপকূলে আসার সময় বেশকিছু ট্রলার বঙ্গোপসাগরে জাল ফেলে এবং সেই জালে শেষ বেলায় প্রচুর পরিমাণে ইলিশ মাছ ধরা পড়ে ।  নিম্নচাপ কেটে যাওয়ার পরও আরও ইলিশ মাছ ধরা পড়বে।

    গত কয়েকদিন ধরে সমুদ্রে ইলিশ ঝাঁকের দেখা মিলেছে । মাছের সাইজও ভালো । বেশিরভাগ ইলিশের ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে এক কেজি । দীর্ঘ প্রায় চার বছর ধরে সমুদ্রে এরূপ মাছের ঝাঁক দেখা যায়নি । এই মাছ সব এলাকার মৎস্যজীবীরাই পেয়েছেন । ইলিশের দামও ভালো রয়েছে । তবে এখন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকার কারণে সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে । দুর্যোগ কেটে গেলে ভালো মাছ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । কারণ এখন সমুদ্রে ইলিশ হওয়ার অনুকূল পরিবেশ ।
  • Link to this news (আজকাল)