ব্যক্তিগত ভিডিও কাণ্ডে শোরগোল, লালবাজারে অভিযোগ দায়ের করলেন দিলীপ ঘোষ
আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজ্য রাজনীতিতে ফের উত্তাল পরিস্থিতি, কেন্দ্রবিন্দুতে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিওকে ঘিরে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক, আর সেই বিতর্কে নাম জড়িয়েছে দিলীপ ঘোষের। পুরো ঘটনার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন দিলীপ। লালবাজারের জয়েন্ট কমিশনার (ক্রাইম)-কে লেখা চিঠিতে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। তাঁর অভিযোগ, রাজনৈতিকভাবে কালিমালিপ্ত করতে এবং জনসমক্ষে তাঁর সম্মান ক্ষুণ্ণ করতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও ছড়ানো হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘‘এটি আমার বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। যারা এই ভিডিও তৈরি ও প্রচার করেছে, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে কড়া আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হোক।’’
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনে একাধিক ভিডিও ও ছবি সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে, যেগুলিকে নিয়ে দাবি করা হচ্ছে—সেগুলি দিলীপ ঘোষের ব্যক্তিগত মুহূর্তের রেকর্ড। যদিও ‘আজকাল’ এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ মহল দাবি করছে, ভিডিওটি ভুয়ো এবং প্রযুক্তির সাহায্যে তৈরি। তাঁদের বক্তব্য, এই ভিডিওতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি আদৌ দিলীপ ঘোষ নন। তবে জনমানসে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—যদি ভিডিওটি সত্যিই ফেক হয়, তবে কারা এই মিথ্যে প্রচারের পিছনে? কী উদ্দেশ্য তাদের? আবার, যদি ভিডিওটি আসল হয়, তবে সেই ব্যক্তিগত মুহূর্তের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াল কীভাবে? কে বা কারা করল এই ফাঁস?
রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের মতে, দিলীপ ঘোষের রাজনৈতিক কেরিয়ারে ইতিমধ্যেই একাধিক ধাক্কা এসেছে। এক সময় বঙ্গ বিজেপির প্রধান মুখ হলেও, বর্তমানে রাজ্য নেতৃত্ব ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে কার্যত দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে তাঁকে। সাম্প্রতিক সময়ে মোদীর সফরে কিংবা নতুন রাজ্য সভাপতির সংবর্ধনায় তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে ব্যক্তি জীবনে পরিবর্তন এনেছিলেন দিলীপ ঘোষ, যখন তিনি সদ্য বিবাহ করেন রিঙ্কু মজুমদারকে। সেই বিয়েও বিতর্কে জড়িয়েছিল, দীঘা জগন্নাথধামে স্ত্রীকে নিয়ে সফরের সময় তাঁকে এক তৃণমূল মন্ত্রীর উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া নিয়েও শুরু হয়েছিল জলঘোলা।
এই পটভূমিকায় এসে হঠাৎ এমন একটি ভিডিও ফাঁস হওয়া নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত আক্রমণের এক ভয়াবহ সংমিশ্রণ। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছে, এটি হয়তো দিলীপ ঘোষকে আরও কোণঠাসা করার কৌশল। তবে ভিডিওর সত্যতা এখনও অস্পষ্ট। দিলীপ বা তাঁর স্ত্রী—কেউই এখনো এই প্রসঙ্গে জনসমক্ষে মুখ খোলেননি। পুলিশি তদন্তই এখন একমাত্র ভরসা।এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে নানা মতামত। কেউ ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, কেউ আবার ‘নেতার চরিত্র’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তবে বাস্তব হল—একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিককে এখন ব্যক্তিগত স্তরে অপমানিত করে রাজনৈতিক লড়াইয়ের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার খেলায় নেমেছে এক শ্রেণি। লালবাজার কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার।