আজকাল ওয়েবডেস্ক: কোচবিহারে বেআইনি বিরিয়ানির দোকানে পৌরসভার অভিযান, “পুরুষত্ব নষ্টকারী মশলার” অভিযোগে বন্ধ হল একাধিক দোকান। কোচবিহার শহরের শনিমন্দির ও আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ট্রেড লাইসেন্স ও ফুড লাইসেন্স ছাড়াই চলা একাধিক বিরিয়ানির দোকানে হানা দিল পৌরসভা। শনিবার বিকেলে অভিযান পরিচালনা করেন কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ স্বয়ং। এদিন তিনি পাওয়ার হাউস মোড় ও শনিমন্দির এলাকার অন্তত দুটি দোকান বন্ধ করে দেন।
পৌরসভার দাবি, অভিযুক্ত দোকানগুলি রাস্তার ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চালাচ্ছিল, পাশাপাশি খাবারের গুণগত মান ছিল নিম্নমানের। আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ—এই দোকানগুলিতে ব্যবহৃত মশলা খেলে পুরুষদের যৌন সক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মানুষের কাছ থেকে অনেকদিন ধরেই অভিযোগ পাচ্ছিলাম। বলা হচ্ছিল, বিরিয়ানিতে এমন মশলা ব্যবহার করা হচ্ছে যা পুরুষত্ব নষ্ট করতে পারে। বাইরের রাজ্য থেকে কিছু লোক এসে এই দোকান খুলছে, মাঝে মাঝেই মালিকানা বদল হচ্ছে, উদ্দেশ্যও স্পষ্ট নয়।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিমন্দির এলাকার একটি দোকান সম্প্রতি বিহার থেকে আসা এক ব্যবসায়ী পাপ্পু খান ভাড়া নিয়ে চালু করেছিলেন। পুজোর আগে থেকে দোকানটি চালু হলেও, এর কোনও বৈধ নথি ছিল না বলে অভিযোগ। এলাকাবাসী কাজল রায় বলেন, “অনেকদিন ধরেই এই দোকানগুলো নিয়ে সন্দেহ ছিল। খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল।”
পৌরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, বৈধ ফুড লাইসেন্স ও ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করলে আপত্তি নেই। কিন্তু অনুমতি ছাড়া, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ও ফুটপাত দখল করে দোকান চালানো হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, “পুজোর সময় অনেক নতুন দোকান খুলেছে। ছুটির পরে পৌরসভা খুললেই শহরজুড়ে লাগাতার অভিযান চলবে।” তবে প্রশ্ন উঠছে—যখন অভিযোগ ছিল একাধিক দোকানের বিরুদ্ধে, তখন কেন অভিযানে শুধুমাত্র দুটি দোকানই বন্ধ করা হল? এ নিয়ে শহরে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেতার “পুরুষত্ব নষ্টকারী মশলা” মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
ফাস্ট ফুড আধুনিক জীবনের দ্রুতগামী সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ব্যস্ত সময়সূচি, সহজলভ্যতা ও স্বাদের কারণে মানুষ ক্রমশ বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে বার্গার, পিজা, ফ্রাই, বিরিয়ানি বা ভাজাভুজির মতো খাবারের ওপর। কিন্তু এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব মানবস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক। প্রথমত, ফাস্ট ফুডে সাধারণত অতিরিক্ত পরিমাণে চর্বি, চিনি ও লবণ থাকে, যা স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ ও আঁশের ঘাটতি থাকায় শরীরে অপুষ্টি দেখা দেয়। দ্বিতীয়ত, অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত এসব খাবার মস্তিষ্কে “রিওয়ার্ড সিস্টেম” সক্রিয় করে আসক্তির মতো অভ্যাস তৈরি করতে পারে, ফলে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
তৃতীয়ত, ফাস্ট ফুডে ব্যবহৃত কৃত্রিম রং, প্রিজারভেটিভ ও নিম্নমানের তেল পরিপাকতন্ত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, এমনকি দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই খাদ্যাভ্যাস একদিকে যেমন শারীরিক বৃদ্ধিতে বাধা দেয়, অন্যদিকে পড়াশোনায় মনোযোগ কমিয়ে দেয়। সুতরাং, তাৎক্ষণিক স্বাদ ও সুবিধার জন্য ফাস্ট ফুড খাওয়া গেলেও নিয়মিত গ্রহণ করলে তা ধীরে ধীরে শরীর ও মনের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। তাই সুষম খাদ্যাভ্যাস ও বাড়ির রান্নার প্রতি মনোযোগ দেওয়াই সুস্থ জীবনের মূল চাবিকাঠি।