• ‘এসআইআর-এর নামে এনআরসি করা চেষ্টা’, কেন্দ্রকে ছাঁচাছোলা আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রী মমতার
    আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থেকে সভায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁর ছাঁচাছোলা আক্রমণ, “এসআইআর-এর নামে এনআরসি করা চেষ্টা চলছে”। তাঁর আরও প্রশ্ন, “আধার, ভোটার এবং রেশন কার্ড কোনওটাই চলবে না। তাহলে কোনটা চলবে। এত টাকা খরচ করা হল কেন? সেগুলি তো কেন্দ্র এবং কমিশনই তৈরি করিয়েছে।”

    বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) নিয়ে উত্তপ্ত দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ২০০৩ সালের ভোটার তালিকার উপর ভিত্তি করে এই সংশোধনী হয়েছে। কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৬৬ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছে। র মধ্যে ২২ লক্ষ মৃত, ৩৬ লক্ষ অন্যত্র চলে গিয়েছেন বা খোঁজ নেই, সাত লক্ষের একাধিক জায়গায় ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে এবং এক লক্ষ সময়ের মধ্যে নথি জমা দেননি। এই বিশাল সংখ্যক নাম মুছে ফেলা নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংখ্যালঘু, দলিত ও অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ভোটারদের বাদ দেওয়ার চক্রান্ত। আর তা করা হচ্ছে বিজেপির নির্বাচনী সুবিধার জন্য। এই ইস্যুতে সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকেই বিরোধীরা ক্রমাগত আলোচনার দাবি জানিয়ে আসছে। 

    পশ্চিমবঙ্গে শেষ বার এসআইআর হয়েছিল ২০০২ সালে। গত ২৯ জুলাই সোমবার রাজ্যের ২০০২ সালের ভোটার তালিকা প্রকাশ করা শুরু করেছে কমিশন। আপাতত ১১টি জেলার বিধানসভা কেন্দ্রগুলির ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের ওয়েবসাইটে এই তালিকা দেখা যাবে। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা, নদিয়া, হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়ার ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে।

    গত ৩১ জুলাই কমিশন জানিয়েছে, দেশজু়ডে সমস্ত রাজ্যেই হবে এসআইআর। প্রতিটি রাজ্যকে এবিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী বছরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের জেরে ফের একবার উত্তপ্ত হতে পারে রাজ্য রাজনীতি। একদিকে যেমন বিজেপি আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছিল রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে এসআইআর হবেই। তেমনই এর বিরোধিতায় সরব ছিল রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক ব্যানার্জি দিল্লিতে এসআইরকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কথায় কাজ করছে। এসআইআর নিয়ে ইতিমধ্যে সংসদে সরব হয়েছিলেন বিভিন্ন বিরোধী দলগুলিও।

    কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ভোটার তালিকার যাচাইয়ের জন্য মাঠে নামবেন জেলা নির্বাচনী আধিকারিক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার, অতিরিক্ত ইআরও এবং বুথ লেভেল অফিসারেরা । তাঁরা প্রত্যেক ভোটারের বাড়িতে গিয়ে ফর্ম পূরণ করিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করবেন। তার পর নথি যাচাই করে তৈরি হবে সংশোধিত ভোটার তালিকা। এসআইআর নথি যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ১১টি নথিকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল, তাঁদের অতিরিক্ত কোনও কাগজ দেখাতে হবে না। একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে তাঁদের সন্তানদের ক্ষেত্রেও, যদি অভিভাবকের নাম ওই তালিকায় থেকে থাকে। তবে নতুন ভোটার, অন্য রাজ্য থেকে আসা ব্যক্তি অথবা যাঁদের নাম সেই পুরনো তালিকায় নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে বাড়তি নথি ও আলাদা ফর্ম জমা দিতে হবে। এই যাচাইয়ের মধ্যে থাকবে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত তথ্যও। 
  • Link to this news (আজকাল)