খড়দহের পর এবার মুর্শিদাবাদ, ২৪ ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার বিপুল পরিমান আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি
আজকাল | ০৯ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত খড়দহের রিজেন্ট পার্ক এলাকার একটি অভিজত আবাসনে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি উদ্ধারের ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে এবার মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে উদ্ধার হল বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি। সোমবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নওদা থানার পুলিশের একটি দল কুলাইচণ্ডী ঘাটের কাছে অভিযান চালিয়ে তিন ব্যক্তিকে ধরে। তাদের থেকে তিনটি পাইপগান, দুটি পিস্তল এবং ১৩ রাউন্ড গুলি পাওয়া যায়। এরপরেই তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নওদা থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তিদের নাম আত্তার শেখ, রবিউল শেখ ওরফে মকবুল শেখ এবং সামিরুল শেখ। ধৃতদের বাড়ি নওদা থানার অন্তর্গত টুঙ্গি-উত্তরপাড়া গ্রামে। এসডিপিও (বেলডাঙা) উত্তম কুমার গড়াই বলেন,' সোমবার রাতে নওদা থানার পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কুলাইচণ্ডী ঘাট সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি চালায়। তখন ওই তিন ব্যক্তি একটি মোটরসাইকেল করে ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের তল্লাশি করতেই উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি।' তিনজনের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করে মঙ্গলবার তাদের বহরমপুর আদালতে পেশ করা হচ্ছে।
নওদা থানার এক আধিকারিক জানান ,ধৃতদের বিরুদ্ধে অতীতে বহু অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে মকবুল শেখের বিরুদ্ধে খুনের মামলা-সহ জাল টাকা পাচারের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর সম্প্রতি টুঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা এক ঠিকাদারের থেকে এই দুষ্কৃতী দল বড় অঙ্কের টাকা দাবি করেছিল। সেই টাকা না পাওয়ায় ওই ঠিকাদারকে মেরে তাঁর হাত-পা ভেঙে দিয়েছিল এই দুষ্কৃতীরা। নওদা থানার এক আধিকারিক জানান , নিয়মিত বিভিন্ন অপরাধ করার জন্য এই দুষ্কৃতী দলের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় গোপনে আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে রাখত। সোমবার রাতে একটি গোপন ডেরা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের অভিযানে ধরা পড়ে যায় তিনজন।
এসডিপিও জানান,'এই দুষ্কৃতী দলের সদস্যরা মুর্শিদাবাদ জেলায় অপরাধ করে জলঙ্গি নদী পার করে খুব সহজে নদিয়া জেলায় চলে যেত এবং সেখানে কোনও গোপন ডেরায় লুকিয়ে থাকত।' প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে ,সোমবার রাতে ধৃত ওই তিন দুষ্কৃতী নৌকা পার হয়ে নদিয়া থেকে মুর্শিদাবাদ জেলায় এসে পৌঁছয়। এরপর তারা কোনও একটি অপরাধ সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে মোটরসাইকেলে করে যখন যাচ্ছিল সেই সময় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে , ধৃতদের থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রগুলি অত্যন্ত উন্নতমানের। পুলিশের অনুমান এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি সম্প্রতি দুষ্কৃতী দলের সদস্যরা বিহারের মুঙ্গের থেকে আমদানি করেছিল।
অন্যদিকে অপর একটি ঘটনায় কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এবং জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার ক্রাইম মনিটরিং সেলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার রাতে গোপনে অভিযান চালিয়ে ফরাক্কা থানার পুলিশ ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ফরাক্কা ব্যারেজের কাছে নাকা পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে দুই ব্যক্তিকে বিপুল পরিমাণ ব্রাউন সুগার-সহ গ্রেপ্তার করল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের থেকে ৭৬০ গ্রাম ব্রাউন সুগার উদ্ধার হয়েছে। তাদের নাম মহম্মদ জিয়াউর রহমান এবং সাজেদা বিবি মন্ডল। জিয়াউরের বাড়ি মালদা জেলার কালিয়াচক থানা এলাকায় এবং সাজেদার বাড়ি নদিয়া জেলার চাকদহ থানা এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত দুই ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া মাদকের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে কমপক্ষে ৫০ লক্ষ টাকা।
অপর একটি ঘটনায় সোমবার সকালে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে লালগোলা থানার পুলিশ সীতেশনগর গ্রামে অভিযান চালিয়ে হাসানুর জামাল ওরফে বাক্কার নামে বছর তেইশের এক যুবককে প্রায় ৩০০ গ্রাম হেরোইন-সহ গ্রেপ্তার করল। পুলিশ সূত্রের খবর ধৃত যুবক দীর্ঘদিন ধরে মাদক পাচারকারী হিসেবে কাজ করত। সোমবার ভোররাতে নতুন নলডহরি গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবক লালগোলার এক ব্যক্তির থেকে মাদক নিয়ে অন্য জায়গায় যখন পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল সেই সময় পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হাসানুরকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ সূত্রের খবর, আন্তর্জাতিক বাজারে উদ্ধার হওয়া মাদকের মূল্য প্রায় দশ লক্ষ টাকা।