আজকাল ওয়েবডেস্ক: লোকসভায় রদবদল, লোকবদলও বলা যায়। সোমবার লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের চিফ হুইপ-এর পদ থেকে ইস্তফা দেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। গত প্রায় চব্বিশ ঘণ্টায় তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে কম বিতর্ক হয়নি।
তবে ঠিক তার পরের দিন, মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়ে দিল লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের চিফ হুইপ-এর পদে বসছেন সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। অর্থাৎ এবার থেকে কল্যাণের দায়িত্ব সামলাবেন কাকলি। অন্যদিকে লোকসভায় তৃণমূলের ডেপুটি লিডার হচ্ছেন সাংসদ শতাব্দী রায়।
মঙ্গলবার দুপুর দুটোয় অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস এই তথ্য প্রকাশ করেছে। তৃণমূল কংগ্রেস জানিয়েছে, 'কল্যাণ ব্যানার্জি গতকাল লোকসভায় তৃণমূলের সংসদীয় দলের চিফ হুইপের পদ থেকে সরে, চেয়ারপার্সনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। চেয়ারপার্সন তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন এবং এই ভূমিকায় তাঁর অবদানের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বর্ষীয়ান সংসদ সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে, চেয়ারপার্সন তাৎক্ষণিকভাবে লোকসভায় তৃণমূলের নতুন চিফ হুইপ হিসেবে ডঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার এবং লোকসভায় তৃণমূলের নতুন ডেপুটি লিডার শতাব্দী রায়কে মনোনীত করেছেন।'
লোকসভায় দলের চিফ হুইপ হয়ে কী বলছেন কাকলি? আজকাল ডট ইন যোগাযোগ করলে দিল্লি থেকেই সাংসদ জানান, 'আমি দলের কাছে দায়বদ্ধ। দায়বদ্ধ মানুষের কাছে। মানুষের ভোট আর মমতা ব্যানার্জির পরিশ্রমে দল আজ এই জায়গায়। তাই আমি সব দায়িত্ব পালন করতে দায়বদ্ধ। কাজ করব অভিষেক ব্যানার্জির নেতৃত্বে। নতুন প্রজন্ম, নতুন ভাবনার সঙ্গে কাজ হবে।'
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী ও দলের সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে দলের সাংসদদের এক ভার্চুয়াল বৈঠকের পর চিফ হুইপ পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন কল্যাণ। কল্যাণ নিজে তাঁর এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, 'মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন লোকসভায় দলের কো-অর্ডিনেশন ঠিকমতো হচ্ছে না। আঙুল তুলেছেন আমার দিকে। তাই আমি সরে গিয়েছি। দিদি (পড়ুন মমতা ব্যানার্জি) যখন মনে করছেন ঠিকঠাক সমন্বয় হচ্ছে না তখন আমিই সরে গেলাম।' পাশাপাশি কল্যাণ জানিয়েছেন, লোকসভায় তিনি 'ঝগড়া' করছেন কেন সেই বিষয়টিও দলনেত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে উঠে এসেছে। ফলে সবকিছু মিলিয়েই তিনি এদিন বৈঠকের পর চিফ হুইপ পদ থেকে ইস্তফা দেন। তৃণমূলের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, এর আগে কল্যাণের সঙ্গে আরেক তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্রর প্রবল মতানৈক্য নিয়ে সরগরম হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। সেক্ষেত্রে কল্যাণ পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, তাঁকে কেউ গালাগালি করবে আর তিনি চুপচাপ সেটা হজম করে নেবেন এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এমনকী মহুয়া মৈত্রর প্রসঙ্গে তিনি তাঁর দলকেও জানিয়েছিলেন। আশা করেছিলেন, এদিনের বৈঠকে সেই বিষয়টি উঠে আসবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তিনি 'দু:খ' পান। ফলে চিফ হুইপ-এর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পিছনে এই কারণটিও থাকতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের মত।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, সোমবার বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার থেকে লোকসভায় দলনেতা হিসেবে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জায়গায় দায়িত্ব সামাল দেবেন সাংসদ ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি।