আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ–খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত। সাজা ঘোষণার পর থেকে সে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রয়েছে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে সংশোধনাগারে অসভ্য আচরণ ও কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে এক বছর। কিন্তু সঞ্জয়ের মধ্যে অনুশোচনার লেশমাত্র নেই। উল্টে সংশোধনাগারের ভিতরেও অসভ্য আচরণ করার অভিযোগ উঠছে তার বিরুদ্ধে। সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের দাবি, এরকম চলতে থাকলে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন তাঁরা।
প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সাজা ঘোষণার পরে বেশ কয়েকদিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু সঞ্জয়ের মধ্যে কোনও তাপ উত্তাপ নেই। এমনকী অনুশোচনার ছাপও নেই। উল্টে যত দিন যাচ্ছে ততই সহবন্দিদের প্রতি তার দুর্ব্যবহার বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের নির্দেশও অমান্য করছে সে। জানা গিয়েছে, সংশোধনাগারে ঢোকার পর বাগান দেখাশোনার কাজে নিয়োগ করা হয়েছিল সঞ্জয়কে। প্রাথমিক পর্যায়ে সব বন্দিকে ট্রেনিং পিরিয়ডে রাখা হয়। তারপর সংশোধনাগারে স্থায়ী কাজে নিযুক্ত করা হয়। শুরুর দিকে সব ঠিকঠাক চললেও পরে সঞ্জয় কাজকর্ম এড়িয়ে যেতে শুরু করে। সহবন্দি ও জেল আধিকারিকদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করতে থাকে। কর্তৃপক্ষের কাছে নিত্যদিন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ তার মজুরি তোলা বন্ধ করে দিতে পারেন বলে ইঙ্গিত মিলেছে। অর্থাৎ সঞ্জয়ের কাজের পারিশ্রমিক হিসেবে জমা থাকা অর্থ সে আর তুলতে পারবেন না বা ব্যবহার করতে পারবেন না। সঞ্জয়ের এই আচরণ নিয়ে বিশেষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি তার আইনজীবী।
কয়েকমাস আগে জেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছিল, জেলজীবনের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে শুরু করেছে সঞ্জয়। সেভাবে কারও সঙ্গে কথা না বললেও শান্ত হয়েই বসবাস করত সে। কিন্তু বর্তমানে তার স্বভাবে অনেক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি শিয়ালদহ আদালতের আমৃত্যু কারাদণ্ডের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে আরজি কর কাণ্ডে একমাত্র অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। তার দাবি, সে সম্পূর্ণ নির্দোষ, তাকে ফাঁসানো হয়েছে।