• তিলপাড়া ব্যারাজে ডিভাইড ওয়ালে ফাটল আরও চওড়া, যান চলাচল বন্ধ করল জেলা প্রশাসন
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: নতুন করে তিলপাড়া ব্যারাজের ক্ষতির পরিমাণ বাড়ল। বৃহস্পতিবার ব্যারাজের র‍্যাফটের একাংশ ভেঙে পড়ে। রীতিমতো ব্যারাজের মূল অংশ থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছে। ব্যারাজের লকগেট খুলে দেওয়ার পর জলের তীব্র চাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে র‌্যাফটের যথেষ্ট ভূমিকা থাকে। সেইসঙ্গে ব্যারাজের ক্ষতিগ্রস্ত ডিভাইড ওয়ালের ফাটল আরও বেড়েছে। ডিভাইড ওয়ালের একটা অংশ ক্রমশ নদীগর্ভে বসে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এবার সেচদপ্তরের আধিকারিকেরা সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবার জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হল। সেচদপ্তরের তরফে জানা গিয়েছে, এদিন ন’হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়। অধিকাংশ লকগেটই বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, দুর্ঘটনা এড়াতে জেলা পুলিস ও প্রশাসনের তরফে ব্যারাজের উপরের সেতু দিয়ে যান চলাচলে নতুন করে রাশ টানা হয়। নয়া নির্দেশিকা অনুসারে, এদিন সকাল থেকেই ছোট চারচাকা গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র বাইক চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। পায়ে হেঁটে চলাচল করতেও দেওয়া হচ্ছে।

    জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, আবারও ড্যাম বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। খুব দ্রুত ব্যারাজের প্রাথমিক সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে সমস্ত গাড়ি ঘুরপথে চালানো হচ্ছে।

    বর্ষার মরশুম শুরু হতেই তিলপাড়া ব্যারাজ চিন্তা বাড়াতে শুরু করেছে। সংস্কারের কাজ শেষ হওয়ার আগেই ব্যারাজের একাধিক লকগেট খুলে জল ছাড়ার কাজ শুরু হতেই বিপত্তি বাধে। শুরুতেই নির্মাণকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপরই প্রথম ডিভাইড ওয়ালে ফাটল নজরে আসে। ধীরেধীরে সেই ফাটল বাড়ছে। এবার নতুন করে চিন্তা বাড়িয়ে র‍্যাফটের একাংশ ভেঙে পড়ল। ঘটনায় সেচদপ্তরের আধিকারিকেরা যথেষ্টই উদ্বিগ্ন। তাঁদের আশঙ্কা, আবহাওয়ার উন্নতি না হলে ব্যারাজের ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে ব্যারাজের সংস্কারের কাজ শুরু করা সম্ভব, তা জানতে মরিয়া সেচদপ্তরের আধিকারিকেরা। এদিন তাঁরা ফের ব্যারাজ সংলগ্ন সেচদপ্তরের অফিসে জরুরি বৈঠক সারেন। যোগাযোগ করা হয়েছে ড্যাম বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও।

    তিলপাড়া ব্যারাজের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ নজরে আসার পরই জেলা পুলিস ও প্রশাসনের তরফে যানচলাচলে রাশ টানা হয়। শুরুতেই ব্যারাজের উপর থাকা সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন সহ বাস চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এবার ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তেই ছোট চারচাকা গাড়ি ও টোটো চলাচলের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি হল। নিরাপত্তার স্বার্থে সেতুর দুই প্রান্তে ব্যারিকেড বসানো হয়েছে। পুলিসও মোতায়েন রয়েছে। পুলিসকর্মীরা বাইক আরোহীদের নথি যাচাই করে তারপরই সেতুর উপর দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছেন। ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ছোট চারচাকা গাড়ি। রামপুরহাটের বাসিন্দা মাজারুল শেখ বলেন, বোলপুরে গিয়েছিলাম। এখন শুনছি, সেতুর উপর দিয়ে গাড়ি যেতে দেবে না। সাঁইথিয়া হয়ে ঘুরে যেতে হবে। পুলিস প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত সঠিক। তবে আমার মনে হয়, দ্রুত ব্যারাজ সংস্কারের কাজ শুরু করা উচিত। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)