• কাটোয়ায় সদ্য রোয়া ধানজমি জলমগ্ন, ঘুম উবেছে চাষিদের
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: কাটোয়া মহকুমার বহু এলাকায় ধানজমি জলে ডুবে রয়েছে। সদ্য রোয়া জমি জলের তলায় থাকায় চাষিদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে। জলের তলায় থাকা ধানের বীজ পচে যাওয়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। মহকুমাজুড়ে সাড়ে তিন হাজার হেক্টরের বেশি জমি জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। চাষিরা জানান, দ্বিগুণ খরচ করে চাষ করা হয়েছে। জল জমে রয়েছে জমিতে। ধান না হলে সারাবছর খাব কী? 

    লাগাতার বৃষ্টি ও বিভিন্ন কাঁদরের জল উপচে কাটোয়া মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমে রয়েছে। নিচু এলাকায় বেশি জল জমে রয়েছে। আমনের জন্য সদ্য ধান রোয়া হয়েছে। কিন্তু জলে ডুবে যাওয়ায় তা পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিচু এলাকায় জল নামতে অনেক দেরি হচ্ছে। নতুন করে বীজতলা তৈরি করে রোপণ করা ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে যাবে চাষিদের। তাই তাঁদের দুশ্চিন্তা শুরু হয়ে গিয়েছে।

    কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া মহকুমাজুড়ে ৭৩হাজার ৮৫০হেক্টর জমিতে আমন চাষের টার্গেট রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৬৬হাজার হেক্টর জমিতে বীজ রোপণ করা হয়ে গিয়েছে। কাটোয়ার পাঁচটি ব্লকেই কয়েকটি মৌজায় জল জমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাষিরা। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমনের চারা রোপণ করার সময় ১৫আগস্ট পর্যন্ত। তা সত্ত্বেও সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্তও রোয়া যায়। অন্যান্য বছর আগস্ট মাসের শুরুতে প্রায় ৯৮শতাংশ চারা রোপণ  হয়ে যায়। এবারও তাই হয়েছিল। কিন্তু টানা ভারী  বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়লেন চাষিরা। কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট, কাটোয়া-১ ও ২ ব্লকের একাধিক মৌজায় সদ্য রোয়া জমিতে জল জমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাষিরা। কেতুগ্রামের উত্তর মাঠে কাঁদরের জল ছাপিয়ে বিঘার পর বিঘা জমি প্লাবিত। কাটোয়া-১ ব্লকের বাঁধমুড়ো, করজগ্রাম, আলমপুর, গাঁফুলিয়া এলাকায়ও জমি জলে ডুবে রয়েছে। কাটোয়া-২ ব্লকের করুই অঞ্চলেও জমিতে জল ঢুকেছে।

    মহকুমার ৩৭৮০ হেক্টর জমি জলের তলায় ডুবে রয়েছে। তারমধ্যে কৃষিদপ্তরের আশঙ্কা ২০৩৫ হেক্টর জমি ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ১৪১৫হেক্টর জমিতে জল নেমে গেলে পুনরায় রোয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের মিনিকিট প্রজাতির ধান বীজ সরবরাহ করার জন্য কৃষিদপ্তর প্রস্তুত রয়েছে। মহকুমা কৃষিদপ্তরের আধিকারিক প্রলয় ঘোষ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের দেওয়ার জন্য খামারে তিন একর জায়গায় বীজধান প্রস্তুত রেখেছি। জল নেমে গেলে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলেই দেওয়া হবে। 

    চাষিদের দাবি, চাষের খরচ আগের চেয়ে অনেক বাড়ছে। ট্রাক্টর ভাড়া আগে যেখানে বিঘা প্রতি ঘণ্টায় ১০০০-১২০০টাকা নিত। এখন সেখানে বেড়ে হয়েছে ১৪০০টাকা। শ্রমিকদের মজুরিও বেড়েছে। এতকিছু করেও মাঠ ডুবে রয়েছে। কেতুগ্রামের চাষি নিবিড় দাস বলেন, দেড় বিঘা জমিতে ধান রোয়া হয়ে গিয়েছিল। সব জলের তলায় চলে গেল। তপন দাস বলেন, ১০ বিঘা জমিতে ধান রোয়া হয়ে গিয়েছে। সব জলের তলায়। আর এক চাষি বিশ্বজিৎ দাঁ বলেন, চার বিঘা জমিতে অনেক খরচ করে ধান চাষ করেছি। জল কবে নামবে বুঝতে পারছি না। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)