• বেকার যুবকদের ক্যারিয়ার হিসেবে নিয়োগ, উত্তরপ্রদেশ থেকে নদীয়া জেলায় ঢুকছে হেরোইন তৈরির কাঁচামাল
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: নদীয়ার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের হেরোইন তৈরির নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। যোগী রাজ্যের মাদক কারবারিদের হাত ধরে এই নদীয়ায় ঢুকছে হেরোইন তৈরির কাঁচামাল। স্থানীয় কর্মহীন, আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত যুবকদের হাত ধরে তা ছড়িয়ে পড়ছে জেলা ও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়। মূলত ‘ক্যারিয়ার’ হিসেবে কাজে লাগিয়ে তিরিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে এই যুবকদের ব্যবহার করছে পাচারকারীরা।পুলিস ও এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার কালীগঞ্জ, পলাশীপাড়ামাদকচক্রের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। 

    গত ৩১ জুলাই, বেঙ্গল এসটিএফের একটি দল কালীগঞ্জ থানার পানিঘাটায় জাতীয় সড়কের উপর থেকে আটক করে একটি ছয় চাকার কন্টেনার। তা থেকে উদ্ধার হয় ৩৬০ কেজি অ্যাসিটিক অ্যানহাইড্রাইড ও ১৫০ কেজি ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সাইড। এই দু’টি রাসায়নিকই হেরোইন তৈরির মূল উপাদান এবং স্থানীয়ভাবে ‘পাওয়ার’ নামে পরিচিত। চারজনকে ধরা হয়। তাদের মধ্যে 

    আকিল খান ও রেজওয়ান উত্তরপ্রদেশের বানিয়া থানার বাসিন্দা। বাকি দু’জন কুরমান শেখ ও মামুন শেখ নদীয়ার কালীগঞ্জের বাসিন্দা। পুলিসি জেরায় ধৃতরা স্বীকার করেছে, উত্তরপ্রদেশ থেকে নদীয়ায়কাঁচামাল এনে হেরোইন তৈরি করা হয়। কুরমান ও মামুন টোটো ও বাইক নিয়ে এসেছিল সেই কেমিক্যাল নিতে।

    এর একদিন আগেই, ৩০ জুলাই, কালীগঞ্জ থানার মিরা ফাঁড়ির পুলিস আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে রামনগর ঘাট থেকে। ধৃতদের অন্যতম তহিদুর রহমান মুর্শিদাবাদের রেজিনগর থানার তেঘরি গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয়ভাবে সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত তহিদুরের নাম উঠে আসায় পুলিস মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই চক্রে ধরা পড়েছে আরও দুই যুবক— মাসাদুল মণ্ডল ও মনসাদ শেখ, যাদের বাড়ি নদীয়ার পলাশীপাড়ার বড়নলদহে। তদন্তে জানা গিয়েছে, তহিদুর ও মনসাদ মূলত ক্যারিয়ার ছিল। পাচারকারীদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে তারা নিষিদ্ধ কেমিক্যাল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পৌঁছে দিত। এই কাজে তাদের পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া হত ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা।

    পুলিস সূত্রের খবর, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আরও বহু যুবক এই চক্রের সঙ্গেযুক্ত হয়ে পড়েছে। তাদের অনেকেই বেকার, কেউ কেউ আবার সমাজসেবী পরিচয়ের আড়ালে অপরাধ চালাচ্ছে। পুলিসের মতে, কাজের অভাব ও দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়েই পাচারকারীরা তাদের ফাঁদে ফেলছে।পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, বাইরে থেকে কাঁচামাল আসছে।আর স্থানীয় কিছু যুবককে ব্যবহার করে তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। এই চক্র ভাঙতে আমরা ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছি।  প্রতীকী চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)