• অনুন্নত, দারিদ্র ও সন্ত্রাস কবলিত ঝাড়গ্রামের স্মৃতিচারণা মুখ্যমন্ত্রীর
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: একদা পিছিয়ে পড়া, অনুন্নয়ন আর দারিদ্র কবলিত ঝাড়গ্রামের ছবি উঠে এল বিশ্ব আদিবাসী দিবসে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে। ২০১৭ সালে ঝাড়গ্রাম নতুন জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। যদিও তার আগেই ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়ে গিয়েছিল। রাজনৈতিক সন্ত্রাস কবলিত জেলায় শান্তি ফেরাতে সরকারকে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। মানুষের বিপুল সমর্থন নিয়ে রাজ্যের তৃণমূল ক্ষমতায় না এলে সে কাজ সম্ভব হতো না। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এসেছে কীভাবে বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন তিনি প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বারবার ঝাড়গ্রামে এসেছেন। স্থানীয় মানুষের দারিদ্র্যের ছবি তাঁর চোখে ধরা পড়েছে। সিপিএমের স্থানীয় নেতাদের অত্যাচার পিষ্ট অসহায় গরিব মানুষদের লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন। সেই লড়াইয়ে শামিল হওয়া বহু মানুষকে সেই সময়ে ঘরছাড়া হতে হয়েছে। প্রাণ গিয়েছে। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর জেলায় শান্তি ফিরে এসেছে। 

    ঝাড়গ্রামে দু’ দিনের সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার  দেড় দশক আগের ছবি তুলে ধরেছেন। বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগে যখন ঝাড়গ্রামে আসতাম, তখন সরু একটা রাস্তা দিয়ে আসতে হতো। খড়্গপুর থেকে একবার ঝাড়গ্রামে আসছি, দেখি ঝাড়গ্রামের দিক থেকে আসা এক ট্রাক ড্রাইভার আমাদের দিকে হাত তুলে নাচাচ্ছে। তাঁর বলার ভঙ্গিমা ছিল, খানাখন্দ ভরা ওই রাস্তা দিয়ে গেলে মজা বুঝবে। সড়কপথে এখন ঝাড়গ্রামে সহজে পৌঁছতে পারি।’ ঝাড়গ্রাম শহর সম্বন্ধে বলেন, এখন অনেক দোকানপাট হয়েছে। সেই সঙ্গে ঝিলিমিলি হয়ে মকুটমণিপুরে যাওয়ার সুন্দর রাস্তার কথাও বলেন। লালগড় প্রসঙ্গে বলেন, ওখানে আমার গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছিল। সেই লালগড় এখন বদলে গিয়েছে। রাস্তাঘাট হয়েছে। নার্সিং সেন্টার হয়েছে। আগের মতো আর নেই। এদিন দলনেত্রীর স্মৃতিচারণে আপ্লুত ঝাড়গ্রাম জেলার প্রবীণ নেতারা। তেমনই একজন বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নব্বইয়ের দশক থেকে ঝাড়গ্রাম আসছেন। বহুবার তিনি লুকিয়ে এই জেলায় এসেছেন। আদিবাসী মানুষের চরম অভাব অনটন দেখে ব্যথিত হয়েছে। সেই অরণ্যভূমির ছবি উন্নয়নের হাত ধরে বদলে গিয়েছে। প্রশাসনিক ও দলীয় কর্মসূচির মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর স্মৃতিচারণে আমরা এক অন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখছি। তিনি প্রমাণ করছেন, শুধু দলনেত্রী নন, তিনি একজন জননেত্রী। লালগড়ের নেতাই এলাকার বাসিন্দা জয় রায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আজকে লালগড় নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। নেতাই গণহত্যার সময় তিনি এখানে ছুটে এসেছিলেন। শহিদ পরিবারের সদস্যদের চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সেতু, রাস্তাঘাট হয়েছে। নার্সিং সেন্টার হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে সন্ত্রাস কবলিত লালগড় এখন সত্যি বদলে গিয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি প্রসূণ ষড়ঙ্গি বলেন, আমাদের নেত্রী বাংলা ভাষার সম্মান রক্ষার লড়াইয়ে শামিল হওয়ার ডাক দিয়েছেন। স্টেডিয়ামে থাকা ছাত্রছাত্রী, তরুণ থেকে সকল স্তরের মানুষ উচ্চকণ্ঠে সমবেত ভাবে জানিয়ে দিয়েছে ভাষা রক্ষায় তাঁরা লড়াই করবেন।
  • Link to this news (বর্তমান)