• জলমগ্ন খানাকুলে জ্বর, ডায়ারিয়ার প্রকোপ হাসপাতালের মেঝেতে রোগীরা
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: জমা জল থেকে ছড়াচ্ছে নানা ধরনের রোগ। জ্বর, ডায়ারিয়া, সাপের কামড় খাওয়া রোগীর ভিড়ে উপচে পড়ছে হাসপাতাল। উল্লেখ্য, বেশ কয়েকদিন ধরেই জলমগ্ন খানাকুলের বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা। রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ির ভিতরে জল জমে রয়েছে। সেই জল পেরিয়ে দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে গিয়ে দুর্ভোগে বাসিন্দারা। যার ফলে জ্বরজারি, ডায়রিয়ায় থাবা বসাতে শুরু করেছে। রোগীর ভিড়ে বেড মিলছে না হাসপাতালে। মেঝেতে শুইয়েই চলছে চিকিৎসা। খানাকুল ২ ব্লকের নতিবপুর গ্রামীণ হাসপাতালে গত কয়েকদিন ধরে এমনই পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার ডিভিসি নতুন করে জল ছাড়ার পরিমাণও বাড়িয়েছে। ফলে প্রতিদিন বাড়ছে উদ্বেগ। 

    খানাকুল ২-এর বিডিও মহম্মদ জাকারিয়া বলেন, ডিভিসি প্রত্যেকদিন জল ছাড়ছে। তার ফলে জল নামতে দেরি হচ্ছে। প্রশাসন বাসিন্দাদের পাশে রয়েছে। খানাকুল ২ ব্লকের বিএমওএইচ রক্তিম চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিক্ষিপ্তভাবে কিছু জায়গা থেকে ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে রোগীরা ভর্তি হয়েছে। অনেকে জ্বর নিয়েও এসেছেন। সাপ সহ অজানা কামড়ের রোগীও এসেছে। সব ধরনের রোগীই আসছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। আপাতত বেড আর ফাঁকা নেই। 

    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন গ্রাম থেকে চারজন ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। সাপ ও অজানা পোকার কামড়ে অসুস্থ হয়ে অনেকে হাসপাতালে ছুটছেন। নতিবপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ৩০টি বেড রয়েছে। রোগীর চাপ সামলাতে আরও ছ’টি বেড বাড়ানো হয়েছে। তারপরেও তিন রোগী মেঝেতে রয়েছেন। 

    বিএমওএইচ বলেন, নিত্যদিন হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা প্লাবিত এলাকায় গিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন। নৌকা, ট্রাক্টরে চেপে ও হেঁটে তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন। প্রসূতিদের খোঁজ খবর নিয়ে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অধিকাংশ মানুষকেই আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোনও রোগ নিয়ে উদ্বেগ নেই। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। এলাকায় ব্লিচিং পাউডারও ছড়ানো হচ্ছে। 

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, খানাকুলের বন্দরে এদিনও রূপনারায়ণ প্রাথমিক বিপদসীমার উপর দিয়েই বইছে। এদিন ডিভিসির তরফে ৬৬ হাজার ৭৫০ কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে। খানাকুলের পাশাপাশি আরামবাগ ব্লকের একাংশেও জমা জলে দুর্ভোগের মধ্যে কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা। আরামবাগের তেলুয়া গ্রামের ছোট দাসপাড়ার বাসিন্দাদের ত্রাণ সামগ্রী বিলি করে আরামবাগ থানা। দেওয়া হয় একটি নৌকাও। স্থানীয় বাসিন্দা মনসা দাস বলেন, খালের জল উপচে আমাদের গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। খুবই সমস্যার মধ্যে রয়েছেন বাসিন্দারা।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)