• এটিএমে টাকা লুটের চেষ্টা ঝাড়খণ্ডের ৩ দুষ্কৃতী পাকড়াও
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: এটিএম থেকে টাকা লুটের অভিযোগে ভিনরাজ্যের তিন দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করেছে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিস। বৃহস্পতিবার সকালে সদর থানার মাকুড়গ্রামে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে ওই দুষ্কৃতীরা বেশ কয়েক হাজার টাকা আত্মসাৎ করে বলে পুলিসের দাবি। এদিন সাটার নামিয়ে এটিএম থেকে টাকা হাতসাফাই করার সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। তাঁরাই দুষ্কৃতীদের তাড়া করে ধরে পুলিসের হাতে তুলে দেন। পুলিস প্রথমে তাদের আটক করে। পরে গ্রেপ্তার করা হয়। হিন্দিভাষী দুষ্কৃতীরা ঝাড়খণ্ডের নম্বরপ্লেটযুক্ত একটি চারচাকা গাড়ি নিয়ে বাঁকুড়ায় এসেছিল। সিসি ক্যামেরায় ব্ল্যাকটেপ দিয়ে ঢেকে তারা ‘অপারেশন’ শুরু করেছিল। যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা সজাগ থাকার কারণে তারা এদিন সফল হয়নি। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মুকেশকুমার তেওয়ারি, রাহুল দ্বিবেদী ও প্রফুল্লকুমার ভার্মা। মুকেশ ও রাহুল ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। প্রফুল্লের বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। 

    বাঁকুড়ার পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, ধৃতদের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা, তিনটি করে মোবাইল ফোন ও এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। একটি চারচাকা গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আজ, শুক্রবার তিনজনকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হবে।   

    স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মাকুড়, সিদ্ধার্থ সিংহ বলেন, এদিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাজ্য সড়ক সংলগ্ন ওই এটিএমের সামনে ঝাড়খণ্ডের ওই চারচাকা গাড়িটি এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে চারজন নেমে সটান এটিএমের মধ্যে ঢুকে পড়ে। তারা দ্রুত এটিএমের সাটার নামিয়ে দেয়। ব্যাঙ্কের তরফে মেশিনে টাকা ভরার জন্য তারা এসেছে বলে প্রথমে আমরা মনে করেছিলাম। তবে বন্ধ এটিএমের ভিতর থেকে নানা শব্দ ভেসে আসায় সন্দেহ হয়। বেশ কিছুক্ষণ কেটে যাওয়ার পরও এটিএমের ভিতর থেকে চারজন না বের হওয়ায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। তখন সাটার তুলে আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করি। ওইসময় এটিএমের সিসি ক্যামেরাগুলির মুখ ব্ল্যাকটেপে ঢেকে দেওয়ার বিষয়টি খেয়াল করি। তারপরই তাদের আটকে রাখার চেষ্টা হয়। ওইসময় এক দুষ্কৃতী পালিয়ে যায়। বাকি তিনজনকে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

    বাঁকুড়া সদর থানার এক আধিকারিক বলেন, ধৃতরা তিনজনই গাড়িতে চেপে এটিএম লুট করতে এসেছিল বলে স্বীকার করেছে। চতুর্থজনের ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। স্থানীয়রা অপরিচিত কাউকে দেখে দুষ্কৃতীদের সঙ্গী হিসেবে ভেবে নিয়েছেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কীভাবে দুষ্কৃতীরা টাকা লুট করেছিল? এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, প্রথমে দুষ্কৃতীরা যন্ত্রের সাহায্যে এটিএমের টাকা বের হওয়া প্যানেলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। পরে পরিচিতদের এটিএম কার্ড ‘সোয়াইপ’ করে টাকা তোলার প্রক্রিয়া শুরু করে। নোট মেশিনের প্যানেলে আসার সঙ্গে সঙ্গে তা সাঁড়াশি জাতীয় যন্ত্রের সাহায্যে আটকে নেয়। কিন্তু কোনওভাবেই প্যানেল থেকে বের করে না। নিয়ম অনুযায়ী কেউ টাকা না নিলে কিছুক্ষণ পর পুনরায় মেশিনের নির্দিষ্ট জায়গায় ওই নোট ফিরে যায়। সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের অ্যাকাউন্টেও তা পরে জমা হয়ে যায়। দুষ্কৃতীরা ওই সময়সীমা কেটে যাওয়ার পর নোট সহ সাঁড়াশি বের করে টাকা হস্তগত করে। তাদের অ্যাকাউন্টেও টাকা জমা হয়ে যায়।  স্থানীয়দের হাতে পাকড়াও দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)