জলপাইগুড়িতে ১৪ বছরে ৬ লক্ষ গাছের চারা বিতরণ দেব দম্পতির, গড়ে উঠেছে বীজ ব্যাঙ্ক
বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৫
ব্রতীন দাস, জলপাইগুড়ি: ছেলের জন্মের পর খুশিতে নার্সিংহোমের কর্মীদের মিষ্টিমুখ করানোর পরিবর্তে তুলে দিয়েছিলেন নিমের চারা। সদ্যোজাত সন্তানকে বাড়ি নিয়ে আসার পর যাঁরা দেখতে এসেছিলেন, তুলে দেন ফুল-ফলের চারা। সেই শুরু। ছেলের বয়স এখন ১৪ বছর। কিন্তু উদ্যোগ থামেনি বাবা-মায়ের। ফি বছর ছেলের জন্মদিন উপলক্ষ্যে গাছের চারা বিলি করেন জলপাইগুড়ির দেব দম্পতি। এবার একটু আগেই শুরু হয়েছে চারা বিলি।
ওই দম্পতির বাড়ির সামনে থরে থরে সাজিয়ে রাখা তুলসী, বেল, বকুল, আতা, কাঁঠাল, অ্যাভোকাডোর চারা। পথচারী থেকে এলাকাবাসী, যাঁর যে গাছ পছন্দ, নিয়ে যাচ্ছেন। ১১ সেপ্টেম্বর ছেলে শীর্ষচন্দ্রের জন্মদিন। কিন্তু গত জুন মাস থেকে চারা বিলি শুরু করেছেন মৃদুল দেব ও শুভ্রা দেব। এবছর ইতিমধ্যে ২০ হাজার চারা বিলি করেছেন। টার্গেট ৬০ হাজার। ১৪ বছরে দেব দম্পতি বিলি করেছেন প্রায় ৬ লক্ষ গাছের চারা।
সারাবছর ধরে বীজ সংগ্রহ করেন মৃদুল ও শুভ্রা। তারপর চারা তৈরি করে তুলে দেন এলাকাবাসী ও পথচলতি মানুষের হাতে। দেব দম্পতির উদ্যোগে জলপাইগুড়ির বামনপাড়ায় গড়ে উঠেছে বীজ ভাণ্ডার। এগিয়ে এসেছেন ক্লাবের ছেলেরাও। এলাকার মানুষ ফল খেয়ে বীজ না ফেলে দিয়ে যান বীজ ভাণ্ডারে। বছর তিনেক আগে ট্রাকে করে বস্তা ভর্তি বীজ নিয়ে গিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল গোরুমারার জঙ্গলে। এবার তিস্তার পাড়ে ফুল, ফলের বীজ ছড়ানোর পরিকল্পনা দেব দম্পতির।
সারা বছরই দেব দম্পতির বাড়ি থেকে গাছ বিলি চলে। শুভ্রা জলপাইগুড়ি শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার। তিনি বলেন, বাড়িতে কোনও অনুষ্ঠান হলে অনেকে উপহার নিয়ে আসেন। রিটার্ন গিফট হিসেবে তাঁদের গাছের চারা দিই। জন্মদিনে ছেলে স্কুলে অনেক রকম চারা নিয়ে গিয়ে বন্ধুদের দেয়।
শুভ্রার স্বামী মৃদুল ব্যবসায়ী। তাঁর কথায়, এখন শ্রাবণ মাস চলছে। সেজন্য বেলের চারা বিলি করছি। সঙ্গে বকুল, তুলসী, আতা, কাঁঠাল, মেহগনি, অ্যাভোকাডোর চারাও তুলে দিচ্ছি। চারা বিলি করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়ে দেওয়া হয়।