সার নিয়ে বৈঠকে কড়া বার্তা জেলা কৃষিদপ্তরের , কালোবাজারির অভিযোগ পেলে ব্যবসায়ীর নামে এফআইআর!
বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, বালুরঘাট: সারের কালোবাজারি ও অনিয়ম রুখতে আরও কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে কৃষিদপ্তর। জেলার সার ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠক করে বৃহস্পতিবার এই বার্তা দিয়েছেন কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা।
ইতিমধ্যে সারের কালোবাজারি ও অনিয়মের অভিযোগে বেশকিছু ডিলার ও দোকানদারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এবার কালোবাজারি বা অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পেলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দোকানদার বা ডিলারের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে।
সূত্রের খবর,এদিনের বৈঠকে সার ব্যবসায়ীদের বেশকিছু সমস্যা উঠে এসেছে। ব্যবসায়ীদের সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা করবে দপ্তর। দক্ষিণ দিনাজপুরের ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, মালদহ থেকে সার আনতে প্রতি কেজিতে বাড়তি খরচ হচ্ছে। তাই রামপুর রেক পয়েন্ট থেকে সার আনার দাবি তুলেছেন ব্যবসীরা।
জেলা কৃষি দপ্তরের মুখ্য কৃষি অধিকর্তা অমিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, এদিনের বৈঠকে সার ব্যবসায়ীদের নানা দাবিদাওয়া শুনেছি। আমরা সেগুলি মেটানোর চেষ্টা করছি। মালদহ থেকে সার আনতে বাড়তি খরচ হয়। রামপুর রেক পয়েন্টের মাধ্যমে সার আনা যাবে কি না, জেলা প্রশাসন বিষয়টি দেখছে। তবে, আমরা ইতিমধ্যে নানা অনিময়ের অভিযোগে তিনজন ব্যবসায়ীকে সাসপেন্ড করেছি।
মুখ্য কৃষি অধিকর্তার কড়া বার্তা, সারের কালোবাজারি কোনওভাবেই বরদাস্ত করা যাবে না। অভিযোগ পেলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে এফআইআর করা হবে।
এদিনের বৈঠকে ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট ফার্টিলাইজার অ্যান্ড এগ্রি ইম্পোর্টস ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষ পুণ্য চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, নির্ধারিত দামের বেশি নেওয়া যাবে না, সেবিষয়ে সমস্ত ডিলারকে এনিয়ে সতর্ক করেছি। আমাদের দাবিগুলিও জানানো হয়েছে। প্রশাসন সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে।
জেলায় সার ডিলার এবং দোকানের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৩০০। সার বিক্রির ক্ষেত্রে নানা নিয়ম বেঁধে দিয়েছে প্রশাসন। এদিনের বৈঠকে ফের সেই নিয়ম স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়। বৈঠকে ছিলেন জেলা পরিষদের অতিরিক্ত জেলাশাসক নবীন কুমার চন্দ, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ও কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা।
কৃষি দপ্তর জানিয়েছে, সার বিক্রিতে ই-পস মেশিন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ইচ্ছেমতো ট্যাগ বসানো যাবে না। দোকানের সামনে বোর্ড লাগিয়ে সারের দাম জানিয়ে দিতে হবে। নির্ধারিত দামের বেশি নেওয়া যাবে না। কৃষিদপ্তর বলছে, অনেক জায়গাতেই এই নিয়ম মানা হচ্ছে না।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কৃষক সমিতির জেলা সম্পাদক সঞ্জয় মণ্ডলের অভিযোগ, জেলাজুড়ে সারের কালোবাজারি হচ্ছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে কৃষিদপ্তর নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে।
যদিও কালোবাজারির অভিযোগ সম্পূর্ণ সত্য নয় বলে দাবি ডিস্ট্রিক্ট ফার্টিলাইজার অ্যান্ড এগ্রি ইম্পোর্টস ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যক্ষর। তাঁর বক্তব্য, অনেকেই গুজব রটাচ্ছে। তবুও আমরা বিষয়টি দেখছি। ব্যবসায়ীদেরও সতর্ক করছি। নিজস্ব চিত্র।