• সাংসদের দেখা নেই, ক্ষোভে ফুঁসছেন তিস্তার জলে প্লাবিত গ্রামের বাসিন্দারা
    বর্তমান | ০৮ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, নাগরাকাটা, দাজিলিং: তিস্তার জলে প্লাবিত ৮টি গ্রামের বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কোথাও দুর্গতদের নিয়ে আদর্শ গ্রাম তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। আবার দুর্গতদের মধ্যে নিয়মিত ত্রাণ বিলি চলছে। অথচ স্থানীয় সাংসদ বিজেপির ডাঃ জয়ন্ত রায়ের দেখা নেই। প্লাবিত গ্রামে যাওয়া তো দূরের কথা, ত্রাণও পাঠাননি। 

    বৃহস্পতিবার এমপি’র বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলেন ক্রান্তি ও মালবাজারের প্লাবিত গ্রামের দুর্গতরা। জলপাইগুড়ির এমপি অবশ্য বলেন, এখন দিল্লিতে সংসদে আছি। জেলায় ফিরলেই ওই গ্রামগুলিতে যাব। আর জেলার বন্যা ও নদী ভাঙন সমস্যা সংসদে তুলেছি। তিস্তা নদীর বাঁধ মেরামতি সহ বন্যা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলির সঙ্গে কথাও বলেছি। কাজেই হাত গুটিয়ে বসে নেই। 

    ক্রান্তি ব্লকে নিচু গ্রামগুলির মধ্যে সাহেববাড়ি ও পশ্চিম দলাইগাঁও অন্যতম। গ্রামগুলি চ্যাংমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে। বর্ষা নামতেই তিস্তার জলের তলায় চলে যায় গ্রামগুলি। ফলে গ্রামবাসীরা বাঁধের উপর তাঁবু খাটিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। দুর্গতদের বক্তব্য, গবাদি পশুর সঙ্গে সহাবস্থান করছি। জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতারা এখানে এসে ত্রাণ বিলি করেছেন। কিন্তু সাংসদ একবারও আসেননি। 

    চ্যাংমারির প্রধান আব্দুল সামাদ বলেন, মানুষের জন্য লড়াই করতে শিখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত লোকসভা ভোটে হারলেও সুখে দুঃখে গ্রামবাসীদের পাশে আছি আমরা। ভোটপাখি পদ্ম শিবিরের এমপি ও নেতারা এখন ঘুমোচ্ছেন।

    প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে জলমগ্ন চাপাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের পন্ডিতপাড়া, মাস্টারপাড়া, কেরানিপাড়া, বাসুসুব্বা ও পূর্ব সাঙ্গাপাড়া। স্থানীয় সূত্রে খবর, স্থানীয় বৈদ্যডাঙি খাঁড়ির সঙ্গে তিস্তা নদী মেশায় গ্রামগুলির রাস্তা, জমি ও বাড়ি নদীর জলের তলায়। সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলিতে বাড়ি প্রায় ৬৫০টি। যার মধ্যে এখন ৩০০টি বাড়িতে রয়েছে নদীর ঘোলা জল। ঘরে চৌকির উপর চৌকি তুলে দিন গুজরান করছেন দুর্গতরা। এদিন তাঁদের মধ্যে ত্রিপল বিলি করে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। পঞ্চায়েত সদস্য মহম্মদ বাপি বলেন, দুর্গতদের পাশে আছি। নিয়মিত তাঁদের মধ্যে ত্রাণ বিলি করা হচ্ছে। 

    মালবাজার ব্লকের বাগরাকোট পঞ্চায়েতের টটগাঁও গ্রামের অবস্থাও একই। সংশ্লিষ্ট গ্রামের বাসিন্দাদের নিয়ে আদর্শগ্রাম গড়ছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে জমিও দেওয়া হয়েছে। এই গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোটের সময় প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পদ্ম শিবিরের এমপি, নেতাদের দেখা নেই। তাই ছাব্বিশের নির্বাচনে সবদিক ভেবেই উপযুক্ত জবাব দেব। 

    এদিকে, ধসবিধ্বস্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক স্বাভাবিক। টানা চারদিন পর এদিন সন্ধ্যায় কালিম্পং ও সিকিমগামী ওই সড়ক খুলেছে এনএইচআইডিসিএল। প্রশাসন সূত্রে খবর, ধসে ক্ষতিগ্রস্ত শ্বেতীঝোরায় পাহাড় কেটে রাস্তা করেছে এনএইচআইডিসিএল। সেখান দিয়ে একমুখী যান চলাচল শুরু হয়েছে। 

     চ্যাংমারির সাহেববাড়িতে কোমর সমান জল। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)